বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শাবির বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষক প্যানেলে ‘বিভক্তি’

  •    
  • ১৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:২১

পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. খালিদুর রহমান বলেন, ‘ জামায়াত আগে থেকে নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম পুরো প্যানেল দিতে না পারলেও অন্তত ৪/৫টি পদে প্রার্থী দিতে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোনো পদেই প্রার্থী দেয়া হয়নি।’

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষক প্যানেলে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। শতাধিক শিক্ষক নিয়ে গঠিত প্যানেলটি ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ নামে পরিচিত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ ছিল। শিক্ষক সমিতির সবশেষ নির্বাচন ঘিরে তা চরম আকার নেয়।

গত ৩১ মার্চ শাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের ভোট হয়। এতে অংশ নেয়নি ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’।

এতে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থীদের শিক্ষক প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ১১টি পদের মধ্যে ৯টিতেই জয় পায়। আর আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ পায় দুটি পদ।

২০১০ সালে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে ঘিরেও বিভক্তি দেখা দিয়েছিল আওয়ামী ও বামপন্থী শিক্ষদের মধ্যে। তৈরি হয়েছিল দুটি আলাদা প্যানেল। এখন সে পথেই হাঁটছে বিএনপি-জামায়াত অনুসারী শিক্ষকরা।

সবশেষ শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’-এর প্যানেল না দেয়া নিয়ে এই প্যানেলের শিক্ষকদের মধ্যেই রয়েছে নানা গুঞ্জন। আছে এই বলয়ের নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও।

এ নিয়ে গত ১১ এপ্রিল এই বলয়ের শীর্ষ নেতা অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিমের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দাবি করে চিঠি দেন বিএনপি-জামায়াত অনুসারী ৫ শিক্ষক।

শিক্ষকদের কয়েকজন মনে করেন, চিঠি দেয়ার মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে।

এই বলয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একই ব্যক্তির নেতৃত্বে থাকা, জামায়াত নিয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের একটি অংশের অস্বস্তিসহ নানা কারণে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’-এর মধ্যে অনেকদিন ধরেই মতানৈক্য চলছে।

এই শিক্ষকরা জানান, এবারের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে জামায়াত অনুসারী শিক্ষকরা অংশ নিতে চাননি। যেখানে বিএনপি অনুসারী একটি অংশ জামায়াতকে ছাড়ায় নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে মত দেন।

এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে না পারায় নির্বাচনে প্যানেল দেয়নি ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’। তবে নির্বাচনে প্যানেল না দিলেও এই বলয়ের বেশিরভাগ শিক্ষকই ভোট দেন।

অভিযোগ আছে, এই বলয়ের নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পছন্দের প্যানেলকে বিজয়ী করতেই আলাদা প্যানেল দেয়া হয়নি।

নির্বাচনে আলাদা প্যানেল না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’-এর শীর্ষ নেতা অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিমকে লিখিত চিঠি দেন এই বলয়ের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. খালিদুর রহমান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মোরাদ ও অধ্যাপক ড. শাহ মো. আতিকুল হক।

চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন থেকে বিরত থাকার ক্ষেত্রে ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া এবং ফোরাম সংশ্লিষ্ট স্বার্থ বিসর্জিত হওয়ায় জাতীয়তাবাদী অংশের অন্যতম জ্যৈষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিমকে বৈঠক আয়োজন করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু নানা অজুহাতে অধ্যাপক মো. সাজেদুল করিম বৈঠক আয়োজন থেকে বিরত আছেন।

এ বিষয়ে এই বলয়ের সদস্য পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. খালিদুর রহমান বলেন, ‘ব্যক্তি স্বার্থ, ক্ষুদ্র স্বার্থ এবং প্রশাসনের এজেন্ডা বাস্তবায়নে গত নির্বাচনে আমাদের প্যানেল দেয়া হয়নি।

‘জামায়াত আগে থেকে নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছিল। আমরা চেয়েছিলাম পুরো প্যানেল দিতে না পারলেও অন্তত ৪/৫টি পদে প্রার্থী দিতে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোনো পদেই প্রার্থী দেয়া হয়নি।’

প্যানেল না দেয়ার কারণ অনুসন্ধানের জন্য বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়ে খালিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভাঙন চাই না। তবে জবাব চাই।’

খালিদুর রহমান আরও বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ বর্তমানে তিন সদস্যের একটি স্টিয়ারিং কমিটি দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে।

এই কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েকজন সদস্য একটি চিঠি দিয়েছেন। তবে চিঠির কিছু শব্দ প্রাতিষ্ঠানিক চিঠির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই এটি আমি গ্রহণ করিনি।’

তিনি বলেন, ‘যারা চিঠি দিয়েছেন তারা মনে করছেন এখনই মিটিং করা প্রয়োজন। আবার অনেকেই মনে করছেন, রোজার সময়ে ক্লাস পরীক্ষা নিয়ে সবাই ক্লান্ত থাকে। তাই এই সময়ে মিটিং দরকার নেই। এ কারণে আমরা রোজার পরে মিটিং করব।’

প্যানেল না দেয়ার পেছনে ব্যক্তিস্বার্থ আছে কি না প্রশ্নের জবাবে সাজেদুল করিম বলেন, ‘আমরা কেন প্যানেল দিতে পারিনি এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। নানা অভিযোগও আছে। মিটিং করে সব বিষয় পর্যালোচনা করব।’

নির্বাচনকালীন সময়ে মেয়ের বিয়ের কারণে ছুটিতে ছিলেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণে আমি নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারিনি। অন্য যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা চেষ্টা করেছেন। তবে সময়স্বল্পতার কারণে প্যানেল দিতে পারেননি। এর যৌক্তিক কারণও আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর