চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অটোরিকশা চালকের মারধরের পর শিক্ষার্থীরা একটি অটোরিকশা আটক করলে তাদেরকে আবার মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসির কর্মীরা।
নেতাকর্মীরা জানান, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন মোটরসাইকেল নিয়ে এক নম্বর রেল ক্রসিংয়ে যান। এ সময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে তার মোটর সাইকেলের ধাক্কা লাগে। ওই চালককে সাবধানে সিএনজি চালাতে বললে চালকের সঙ্গে আরাফাতের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অটোচালক আরাফাতকে মারধর করেন।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে জিরো পয়েন্ট ফটকে তালা দেয় সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা। একই সঙ্গে রেলক্রসিং থেকে একটি অটোরিকশা জব্দ করে নিয়ে আসে।
বিষয়টি জানতে পেরে ক্যাম্পাসের সিএনজি চালক ও স্থানীয়রা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলক্রসিং ও এক নম্বর গেটে অবস্থান নেয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরা শিক্ষার্থীদের মারধর করে।
বাংলা বিভাগ ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তানভির আহমেদ শরীফ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কি না জিজ্ঞেস করার পর রেল ক্রসিং এলাকায় আমাকে স্থানীয় বেশ কয়েকজন বিনা কারণে মারধর করে।’
শহর থেকে টিউশন করে ফিরছিলেন প্রাণিবিদ্যা ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিব্য ভট্টাচার্য। তাকেও মারধর করা হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ফেইসবুক গ্রুপে নিশাত তাবাসসুম মারধরের কয়েকটি ছবি দিয়ে লেখেন, ‘ইফতারের ঠিক কিছুক্ষণ আগে আমার বন্ধু এক নম্বর থেকে আসার সময় সিএনজি চালকেরা আগের দিনের ঝামেলার জের ধরে পিটিয়েছেন। কোনোমতে মাথা ও কপাল বাঁচিয়ে আসা গেছে।
‘সিএনজি চালকেরা এক নং গেটে আজকে যাকে পেয়েছেন তাকেই পিটিয়েছেন বেধড়ক। অন্য একজনের মাথা ফেটে রক্তারক্তি অবস্থা। আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদেরকে আসলে কী ভাবা হয়? লোকাল মানুষ যা পারবে করবে, প্রশাসন কিছু বলবে না?’
এ ঘটনায় ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিজয় গ্রুপের নেতা মো. ইলিয়াস বলেন, ‘আমাদের ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে হবে, তারপর পড়ালেখা। না হলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হবে।’
এরপর পৌনে ১০টায় ফটকের তালা খুলে দেয়া হয়। পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি, স্থানীয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আগামী শনি ও রোববার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম জানান, আগামী শনিবার ও রোববার বৈঠক হবে। শনিবার সকালে ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, প্রক্টরিয়াল বডি, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মিলে বসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত কয়েকজনকে চিহ্নিত করা গেছে। শনিবার দুপুরে সিএনজির মালিক এবং রোববার সিএনজি চালকদের সঙ্গে বৈঠক হবে।