বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলারও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
বৃহস্পতিবার রাতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডারর খন্দকার আল মঈন জানান, ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুর রহমানকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, বমনা বটমূলে হামলা ছাড়া একাধিক হামলায় তার জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে বোমা হামলায় ১০ জন নিহত হন ও অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডি হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানি নিয়ে হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালতে শেষ হয়।
২০১৪ সালের ২৩ জুন বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন। রায়ে নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ ৮ জনের ফাঁসি ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। অনাদায়ে আরো এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত।
এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা। সেই আপিল শুনানি হাইকোর্টে ঝুলে আছে আট বছর ধরে। কবে নাগাদ এ মামলা হাইকোর্টের গণ্ডি পেরোবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। মামলাটির আপিল শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরি হলেও এখনও সেখানেই থেমে আছে। একবার শুনানি শেষে মামলাটি যুক্তিতর্কের পর্যায়ে গেলেও ওই পর্যন্তই। ফলে মামলাটি এখনও হাইকোর্টে শুনানির পর্যায়ে রয়ে গেছে।
মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- মাওলানা তাজউদ্দিন, মওলানা আকবর হোসেন, মুফতি আব্দুল হাই, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান ও মাওলানা আরিফ হাসান সুমন। এর মধ্যে পৃথক একটি মামলায় মুফতি আবদুল হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হাফেজ মওলানা আবু তাহের, মওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, হাফেজ মওলানা ইয়াহিয়া, মওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মওলানা আব্দুর রউফ ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল।