বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে সারা দেশে প্রস্তুতির কমতি ছিল না। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- বুয়েটের শিক্ষার্থীদের আয়োজনটি নিয়ে অনলাইনে প্রশংসার ফুলঝুরি ছুটছে এর নান্দনিকতার কারণে।
বর্ষবরণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে কোনো কেন্দ্রীয় কর্মসূচি না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থাপত্য বিভাগের অ্যালামনাইদের উদ্যোগে বিভাগ প্রাঙ্গণে আঁকা হয়েছে আল্পনা।
১৪২৮ সালের সূর্য অস্ত যাওয়ার পর পরই বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় এই আল্পনা আঁকা। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। নানা রং ব্যবহার করে দৃষ্টিনন্দন এই আল্পনার ছবি এরই মধ্যে আলোড়ন তুলেছে অনলাইন দুনিয়ায়।
এই কর্মযজ্ঞের উদ্যোক্তা স্থাপত্য বিভাগের অ্যালামনাই অর্থাৎ সাবেক শিক্ষার্থীরা। আর অংশ নেন বর্তমান শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা।
নতুন বছরের প্রথম দিনে বুয়েটে এই আল্পনার ছবি উঁচু স্থান থেকে তোলাও উৎসব উদযাপনের এক অনুষঙ্গ হয়ে উঠতে দেখা যায়।
দুপুরের পর বুয়েটে গিয়ে দেখা যায়, কেউ আল্পনার পাশে দাঁড়িয়ে গল্প করছে, আবার মাঝে মাঝে কেউ নাচছে। সব মিলিয়ে এই আল্পনা ঘিরেই চলছে বর্ষবরণের নানা আয়োজন।
সার্বিক বিষয়ে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ দপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বর্ষবরণ উপলক্ষে আমাদের তেমন উদ্যোগ থাকে না। তবে আগের মতো এবারও স্থাপত্য বিভাগ আল্পনা এঁকেছে।’
‘স্বাভাবিক সময়ে’ আল্পনা ছাড়াও বর্ষবরণে দিনব্যাপী নানা প্রোগ্রাম রাখে জানিয়ে তিনি বলেন, এবার রোজার কারণে সীমিত করা হয়েছে অনেক আয়োজন।
অন্যান্য বছর শিক্ষার্থীদের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় আর বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে থাকে শিশুদের ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে বিভাগ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানও হতো। তবে কোভিডের কারণে গত দুই বছর কিছুই করা সম্ভব হয়নি। এবার আবার রোজা। এ সময় রোজা না থাকলে আগামীতে হয়তো আমরা আরও বড় পরিসরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে পারব।’
আল্পনা আঁকার বিষয়ে স্থাপত্য বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রিসালাত বলেন, ‘এটা আমাদের ঐতিহ্য। প্রতিবছর আমরা এভাবেই পয়লা বৈশাখ উদযাপন করি। বিভাগ প্রাঙ্গণে এ দিন অনুষ্ঠানও হতো। তবে কোভিডের কারণে গত দুই বছর কিছুই করা সম্ভব হয়নি। এবার আমরা ছোট পরিসরে আল্পনা এঁকে শুরু করেছি। রোজা শেষ হলে পরবর্তী বছর থেকে হয়ত আমরা বড় পরিসরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এই আল্পনার কাজ চলেছে। এতে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছেন।’