নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাবার কোলে থাকা শিশু তাসকিয়া আক্তার জান্নাতকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে শিশু তাসকিয়ার মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়িতে পৌঁছায়। পরে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে চৌমুহনী-ফেনী সড়কের সোরেগো পুল এলাকায় অবরোধ করেন।
এ সময় স্বজনরা তাসকিয়া হত্যা ও সন্ত্রাসী হামলার বিচারের দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেন। এতে চৌমুহনী-ফেনী সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাড়ির পাশে ডোবায় বাবার সঙ্গে মাছ ধরে তাসকিয়া। বেলা সাড়ে ৩টায় বাবার কাছে বায়না ধরে চকোলেট আর চিপস কিনে দেয়ার।
বাবার সঙ্গে পাশের দোকানে চকোলেট কিনতে গিয়ে নিহত হয় সে। সন্ত্রাসীদের গুলিতে তার মাথা, মুখসহ পুরো শরীর ঝাঁঝরা হয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দোকানি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের রিমন, মহিন, রহিম, আকবর, সুজনসহ ১৫-২০ সন্ত্রাসী আমার দোকানে আসে। তারা আবু জাহের ও তার মেয়েকে লক্ষ্য করে প্রথম এক রাউন্ড গুলি করে।
‘গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে শিশুকন্যাকে ইট দিয়ে আঘাত করে। একপর্যায়ে তারা দোকান থেকে বের হয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় পেছন থেকে রিমন পুনরায় আরও দুই রাউন্ড গুলি করে। এতে লুটিয়ে পড়ে বাবা-মেয়ে।’
শিশুর খালু হুমায়ুর কবির বৃহস্পতিবার দুপুরে ১৭ জনকে আসামি করে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেছেন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপারেশন) দীপক জ্যোতি খিসা বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।’