রানিং স্টাফদের বুধবারের কর্মবিরতির এক দিন পর স্বাভাবিক রূপে ফিরেছে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন। বৃহস্পতিবার বেশির ভাগ ট্রেন সময়মতো ছেড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
তবে ঢাকা থেকে চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন সঠিক সময় থেকে প্রায় ৭ ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুর ছেড়েছে।
ছুটির দিন থাকায় যাত্রীসংখ্যাও কিছুটা কম লক্ষ করা গেছে।
বুধবার ভোর ৬টা থেকে রেলের রানিং স্টাফরা তাদের পেনশন ভাতার দাবিতে কর্মবিরতিতে গেলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরে দুপুরে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন তাদের দাবি মেনে নিলে তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন।
রেলওয়ের একজন চালককে দিনে গড়ে ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা ট্রেন চালাতে হয়। এ জন্য তাদের বাড়তি মজুরি ও পেনশনের ৭৫ শতাংশ টাকা দেয়া হয়। বেতনের বাইরেও চালকরা যত মাইল দায়িত্ব পালন করেন এবং অতিরিক্ত সময় কাজ করেন, তার জন্য নির্দিষ্ট হারে ভাতা পেয়ে থাকেন তারা। এটা রেলে ‘মাইলেজ ভাতা’ হিসেবে পরিচিত।
সম্প্রতি রেলের অতিরিক্ত এ সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে ক্ষুব্ধ হন ট্রেনের চালকরা। তবে বুধবার সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
একই সঙ্গে রেল মন্ত্রণালয় কিংবা রেল কর্তৃপক্ষ ধর্মঘটের জন্য কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে না বলেও ঘোষণা দেন রেলমন্ত্রী।
ধর্মঘটের পরের দিন বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় আছেন।
নীলসাগর এক্সপ্রেসে সান্তাহার যাবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার পারভেজ। ট্রেন ছিল সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। বেলা ১১টার দিকে কমলাপুরে ট্রেনের জন্য বসে থাকতে দেখা গেল তাকে। তখনও ট্রেন আসেনি।
একই কথা জানালেন ওই ট্রেনের যাত্রী জাহিদ হাসান। তিনি নীলসাগর এক্সপ্রেসে যাবেন নীলফামারীর চিলাহাটি। বলেন, কালকের ধর্মঘটের প্রভাব এখনও আছে। অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন সঠিক সময় থেকে প্রায় ৭ ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুর থেকে পৌনে ১টায় ছেড়ে যায়। তবে অন্য কোনো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় সম্বন্ধে জানা যায়নি।
নীলসাগর এক্সপ্রেসের শিডিউল বিপর্যয় বুধবারের ধর্মঘটের কারণে বলেই জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশনের সংশ্লিষ্টরা।
সিলেটগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী মাসুদ হায়দার জানান, ট্রেন সাড়ে ১১টায় ছাড়ার কথা। তবে ২০ মিনিট দেরিতে ছাড়ছে।
বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ সকাল থেকে শুধু একটি ট্রেন বাদে সবগুলো ট্রেন শিডিউল অনুসারে ছেড়ে গিয়েছে। আর কোনো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়নি।’
ধর্মঘটের পর পরিস্থিতি কতটুকু সামলে উঠতে পেরেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গতকাল কর্মবিরতি ছিল। এর প্রেক্ষাপটে যতটুকু শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে তা বুধবার রাত পর্যন্ত হয়েছে। আজ শুধু নীলসাগর এক্সপ্রেস শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে। আশা করি আর কোনো ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ে পড়বে না।’