বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মঙ্গল শোভাযাত্রায় ‘দেশাত্মবোধক গান’-এর পেছনে কী?

  •    
  • ১৪ এপ্রিল, ২০২২ ১৬:৪৯

সরকারি তিতুমীর কলেজের মঙ্গল শোভাযাত্রায় এই গান কেন, অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা। এতে জানা গেছে, মঙ্গল শোভাযাত্রার সময় গানটি গাওয়া হয়নি।

জরা-জীর্ণকে পেছনে ফেলে বাংলা নতুন বছর বরণে বৃহস্পতিবার মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

পয়লা বৈশাখ সকালে ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায়’ প্রতিপাদ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা বর্ষবরণের গানের পরিবর্তে সমবেত কণ্ঠে গাইছেন দেশাত্মবোধক গান ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে..’।

বিষয়টি নিয়ে রসিকতার পাশাপাশি কটূক্তি করছেন অনেকে।

‘৭ কলেজ’ নামে একটি ফেসবুক পেজে ভিডিওটি আপলোড করার পরপরই তা দ্রুত ভাইরাল হয়। প্রথম তিন ঘণ্টায় ভিডিওটি দেখা হয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার বার। শেয়ার হয়েছে ৭ হাজার ২০০ বার। আর মোট কমেন্ট পড়েছে ১ হাজার ৭০০টি।

পোস্টটিতে রিঅ্যাক্ট করেছেন ১৮ হাজার ব্যবহারকারী। যাদের মধ্যে শুধু হাহা রিঅ্যাক্ট করা হয়েছে ১৭ হাজার আইডি থেকে। বিকেলের দিকে ওই পেইজ থেকে ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা হলেও বিভিন্ন আইডিতে সেটি এখনও রয়ে গেছে।

আনিসা তাবাসসুম নামের একজন লিখেছেন, ‘আমাদের এই দেশটা শিক্ষিত মানুষের হাতেই নষ্ট হচ্ছে।’

জাহিদ হাসান রাকিব নামের একজন লিখেছেন, ‘বাংলা নববর্ষের পক্ষ থেকে স্বাধীনতা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।’

লিমটি শাহ নামের আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘নববর্ষের দিন এই গান গাওয়ার জন্য আমরাও আপনাদের ভুলবো না।’

মো. ইবরাহিম হোসেন নামের একজন লিখেছেন, ‘স্বাধীনতার গান কেন!!! অতিরিক্ত চেতনাবাজ হলে যা হয়।'

সরকারি তিতুমীর কলেজের মঙ্গল শোভাযাত্রায় এই গান কেন, অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা। এতে জানা গেছে, মঙ্গল শোভাযাত্রার সময় গানটি গাওয়া হয়নি। শোভাযাত্রা শেষে ক্যাম্পাসে ঢোকার সময়ে আয়োজকদের একাংশ গানটি গাওয়ার সময় ধারণ করা হয় ভিডিওটি। এটি পরে ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ভিডিওটি ভালোভাবে খেয়াল করলেই দেখা যায়, মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষ করে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে ফিরছিলেন সবাই। পেছনের দিকে রাস্তাসংলগ্ন কলেজের মূল ফটকটিও দৃশ্যমান। মঙ্গল শোভাযাত্রা চলার সময়ের ভিডিও ফুটেজও পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে দেখা যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বৈশাখের বিভিন্ন গান গাইছেন।

মঙ্গল শোভাযাত্রা চলার সময়ের ভিডিও থেকে সংগৃহীত ছবি

শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক শামীমা পারভীনের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভিডিওর যে অংশে আমাদের দেশাত্মকবোধক গান গাইতে দেখা যাচ্ছে, তা মূল অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর। নববর্ষের শোভাযাত্রা শেষে আমরা যখন মূল ক্যাম্পাসে ঢুকছিলাম, তখন এই (বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা…) দেশাত্মবোধক গানটি গাওয়া হয়। এর আগে আমরা এসো হে বৈশাখসহ আরও কয়েকটি নববর্ষের গান গেয়েছি।’

আয়োজকদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকালে আমরা ক্যাম্পাসের বিজ্ঞান ভবনের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু করি। সেটি নতুন ভবনের পাশের গেট দিয়ে মূল সড়কে যায়। এরপর রাস্তার বেশ কিছুটা প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসের মূল গেটের সামনে এসে শোভাযাত্রা শেষ হয়।

‘মূল গেটের সামনে বেশ কিছু ছবি তুলে কর্মসূচি শেষ করা হয়। এরপর ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় কেউ কেউ নিজেদের মতো করে দেশাত্মবোধক গান গাইছিলেন। সেটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।’

খণ্ডিত ভিডিও ছড়িয়ে বিতর্ক তৈরি করাকে দুর্ভাগ্যজনক বলছেন অধ্যাপক শামীমা পারভীন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারি তিতুমীর কলেজের মঙ্গল শোভাযাত্রার বেশ কিছু ভিডিও ফেসবুকে আছে। সেগুলো দেখলে মানুষের ভুল ধারণা কেটে যাবে।’

শামীমা পারভীন বলেন, ‘বিষয়টি শুনে আমাদের খুবই খারাপ লাগছে। আমি নিজে ৩০ বছর শিক্ষকতায় আছি। কোন অনুষ্ঠানে কোন গান গাইতে হবে সেটি আমরা বুঝতে পারি। মূল আয়োজন শেষে আমরা দেশাত্মবোধক গান গেয়েছি। দেশাত্মবোধক গান গাওয়া তো অপরাধ হতে পারে না।

‘আমরা ভালো জিনিসকেও ভালোভাবে নিতে পারি না। এটা ঠিক নয়।’

এ বিভাগের আরো খবর