কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার এক হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির সন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার স্ত্রী শাম্মী আরা পারভীনের শত কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়েও চলছে অনুসন্ধান।
কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জাকারিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদকে দাখিল অভিযোগ আমলে নিয়ে আতাউর রহমান ও তার স্ত্রীকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে সম্পদের বিবরণী জমা দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরেও চাওয়া হয়েছে তথ্য।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা বর্তমানে কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার স্ত্রী শাম্মী আরা পারভীন কুষ্টিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
তারা আরও জানান, ‘আতা চেয়ারম্যান’ নামে বেশি পরিচিত এ রাজনৈতিক নেতা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের চাচাতো ভাই। তার বাড়ি ভেড়ামারা উপজেলার ষোলদাগে।
কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফের শহরের বাড়ি দেখাশোনার জন্য ২০১২ সালে কুষ্টিয়াতে আসা আতা অল্পদিনেই প্রভাব তৈরি করেন ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক মহলে। এক দশকের মধ্যে তিনি শহর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে চলে আসেন।
নির্বাচিত হন উপজেলা চেয়ারম্যান। কুষ্টিয়া শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় তার বাড়ি, দোকান ও ব্যবসার তথ্য লোকজনের মুখে মুখে। এরই এক পর্যায়ে দুদক হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে।
আতাউর রহমান আতার তথ্য চেয়ে দেয়া দুদকের চিঠি।
দুদক কুষ্টিয়ার উপপরিচালক মো. জাকারিয়ার সই করা এক চিঠিতে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরকে আতাউর রহমান আতার ঠিকাদারি কাজের তথ্য ও রেকর্ডপত্র দিতে বলা হয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য নির্দিষ্ট ছকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে তথ্য দিতে বলা হয়।
দুদক জানায়, আতাউর রহমান আতা টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি করে ১ হাজার কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ আছে। তার স্ত্রী শাম্মী আরা পারভীন স্বামীর রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বলেও তথ্য এসেছে। অভিযোগ ও তথ্য যাচাইয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে আতাউর রহমান আতা বলেন, ‘আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করতে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক অনুসন্ধান শেষে মামলা করলে তখন আইনগতভাবে তা মোকাবিলা করব। অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি মিথ্যা, তা সময়েই প্রমাণ হবে।’