বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হিন্দু পরিবারে হামলা: গ্রেপ্তার হননি যুবলীগ নেতা

  •    
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২২ ২১:৪৯

মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় করা দুটি মামলায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি উজ্জ্বল খান ও জামায়াত নেতা নুরজামাল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের আমরবুনিয়া গ্রামে হিন্দু পরিবারের বসতবাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনায় করা মামলায় মূল অভিযুক্ত যুবলীগ ও জামায়াত নেতাকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বাগেরহাটের জ্যেষ্ঠ বিচারকি হাকিম আদালতের মাধ্যমে বুধবার সাকিব হাওলাদার ও সুমন শেখকে কারাগারে পাঠানো হয়।

হমলা-ভাঙচুর মামলায় এখন পর্যন্ত কারাগারে আছেন ১৯ জন।

এ ছাড়া ফেসবুকে ইসলাম ও মহানবীকে (সা.) অবমাননা করে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় কারাগারে আছেন কৃষক রমনী বিশ্বাসের ছেলে কৌশিক বিশ্বাস।

একটি পুরোনো পোস্টকে কেন্দ্র করে সোমবার কৌশিক বিশ্বাসের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশ পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম মঙ্গলবার নিউজবাংলাকে বলেন, কৌশিক তিন বছর ধরে ভারতে আছেন। তিনি সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এক সপ্তাহ আগে ভারত থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন কৌশিক। ভারতে থাকার সময় তিনি তার ফেসবুক আইডিতে বিতর্কিত পোস্টটি দেন।

ওই পোস্ট নিয়ে সোমবার বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় জিউধরা বাজারে একটি সালিশ বৈঠক হয়। বৈঠকে কৌশিক বিশ্বাস ও তার বাবা রমনী বিশ্বাস ক্ষমা চান। এ ধরনের কাজ আর করবেন না এবং তিনি (কৌশিক) কিছুদিন এলাকায় থাকবেন না বলেও অঙ্গীকার করেন।

তবে আমরবুনিয়া মসজিদের সেক্রেটারি জামায়াত সমর্থক নুরজামাল হাওলাদার, যুবলীগ নেতা পশ্চিম আমরবুনিয়া গ্রামের উজ্জ্বল খান এর বিরোধিতা করেন। একপর্যায়ে তাদের নেতৃত্বে আসা মিছিল থেকে কৌশিকদের বাড়ি ও পাশের মন্দিরে হামলা হয়।

ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্টের কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আমরবুনিয়া গ্রামের আ. সত্তার হাওলাদার কৌশিক বিশ্বাসের নামে মামলা করেন।

অন্য মামলাটি করেন কৌশিকের বাবা রমনী বিশ্বাস। তিনি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও খড়ের গাদায় আগুন দেওয়ার ঘটনায় ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ে আরও ৮০-৯০ জনকে আসামি করে নাশকতার মামলা করেন।

মোড়েলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় করা দুটি মামলায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি উজ্জ্বল খান ও জামায়াত নেতা নুরজামাল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন

হিন্দু পরিবারের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে।

শহরের সাধনার মোড় এলাকায় বুধবার বিকেলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে করা মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পরিষদের সভাপতি শিব প্রসাদ ঘোষ, সহসভাপতি বাবুল সরদার, সাধারণ সম্পাদক মিলন ব্যানার্জিসহ আরও অনেকে।

এ সময় শিব প্রসাদ ঘোষ বলেন, ‘ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কৌশিক যে অপরাধ করেছে তার বিচার আমরা চাই। সেই সঙ্গে যারা আইন হাতে তুলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

চলছে মন্দির মেরামতের কাজ

হিন্দু পরিবারের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের পর সেখানে যান বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য, পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ও মন্দির মেরামতে মঙ্গলবারই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উপস্থিতিতে কাজ শুরু হয়।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বুধবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতেই কৌশিকদের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি মেরামত করা হয়েছে। এ ছাড়া মন্দির মেরামতে কাজ চলছে।’

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাচ্চু নিউজবাংলাকে বলেন, নতুন টিন ও কাঠ দিয়ে মেরামত করায় কৌশিকদের ঘরটি এখন নতুনের মতোই লাগছে। আশা করছি, মন্দির মেরামতের কাজ আজকের মধ্যেই শেষ হবে। এ ছাড়া গ্রামে এখনও পুলিশ মোতায়েন আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর