বাঙালির সবচেয়ে বড় সর্বজনীন উৎসব বাংলা বর্ষবরণ। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ১৪২৯ বঙ্গাব্দের পয়লা বৈশাখে আনন্দে মাতবে সারা দেশ। আর বর্ষবরণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আনুষ্ঠানিকতা হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। সকাল হলেই বেরুবে সেই মঙ্গলের যাত্রা। চলছে তার শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি। রাতভর চলবে মঙ্গল শোভাযাত্রাকে রঙিন সাজে সাজানোর কর্মযজ্ঞ।
বুধবার বিকেলে চারুকলা ঘুরে দেখা গেল, মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে ব্যস্তমুখর সময় কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা রঙিন করবে চারটি বড় লোকজ মোটিভ। এর মধ্যে রয়েছে পাখি, মাছ, ঘোড়া ও টেপা পুতুল। এগুলোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কোনোটির রঙ করা হয়ে গেছে কোনোটির রঙের কাজ চলছে। শুধু টেপা পুতুলের রঙের কাজ শুরু হয়নি।
এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে।’
এই প্রতিপাদ্যের সঙ্গে মিলিয়ে রঙিন হবে টেপা পুতুলের সাদা জমিন।
এ নিয়ে চারুকলার ২২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুমিত সেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি কীভাবে সাজানো হবে সেটা আমাদের শিক্ষকরা ঠিক করে দেবেন, সেই মোতাবেক কাজ হবে। রাতে শিশির স্যার (শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য) এসে জানাবেন তখন কাজ শুরু হবে।’
এ ছাড়া মুখোশসহ মঙ্গল শোভাযাত্রার নানা অনুষঙ্গের কাজে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা।
শোভাযাত্রায় নানা রকমের মুখোশসহ স্থান পাবে বড় দুটি মুখোশ, শিক্ষার্থীরা যার নাম দিয়েছেন রাজা-রানির মুখোশ।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চারুকলায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল পোস্টার উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।
এরপর উপাচার্য ঘুরে ঘুরে দেখেন শোভাযাত্রার প্রস্তুতি। এ সময় তিনি বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর খুব সীমিত পরিসরে বৈশাখ উদযাপন করতে হয়েছে। এবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় গত বছরগুলোর মতো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এটাই ছিল চারুকলার বৈশিষ্ট্য, এটাই চারুকলার ঐতিহ্য।’
এবার টিএসসি থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে বলে জানিয়ে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
শোভাযাত্রা সকাল ৯টায় টিএসসি থেকে শুরু হয়ে স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হবে।
এদিকে নেচে গেয়ে পুরনো বছরকে বিদায় জানাতে চারুকলার বকুলতলায় চলছে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবের প্রস্তুতি।