দশ বছর পর পর শুমারির জন্য অপেক্ষায় না থেকে প্রতি বছর জনসংখ্যার হালনাগাদ তথ্য চান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেছেন, এবারের জনশুমারিই মাথা গোনার মাধ্যমে করা শেষ জনশুমারি।
‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’ সামনে রেখে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বুধবার তিনি এ কথা বলেন।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, শুমারি প্রকল্পের পরিচালক দিলদার হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ১৫ থেকে ২১ জুন শুরু হচ্ছে দেশের ষষ্ঠ আদমশুমারি। দেশব্যাপী মাঠ পর্যায়ে একযোগে সাতদিন তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
যদিও এই শুমারি শুরুর কথা ছিল ২০২১ সালের জানুয়ারিতে, তবে নানা কারণে তা পিছিয়ে গেছে। শুমারি কাজ পরিচালনা করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো- বিবিএস।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘শুমারি শুরু করতে আমরা দেড় বছর পিছিয়ে রয়েছি। এর সংগত কারণও ছিল। প্রথমে করোনার কারণে এবং পরে ট্যাব কেনায় জটিলতায় এটা পিছিয়েছে। তবে দেরি হলেও ডিজিটালের মাধ্যমে শুমারি বেশ নিখুঁত হবে, বেশি বিশুদ্ধ হবে।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ৫ বছর বা স্বল্প সময়ে জনশুমারি সম্পন্ন করে। আমরা কেন ১০ বছর অপেক্ষা করব, কেন সময়মতো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের জনসংখ্যার সঠিক তথ্য পাবেন না। আমাদের হাতের কাছে নানা টেকনোলজি আছে। স্বল্প সময়ে জনশুমারির জন্য সমসাময়িক এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
‘আমার মনে হয়, ১০ বছর অন্তর অন্তর এইভাবে মাথাগুণার আয়োজনের দরকার নেই, এবারই শেষ। দেশ এগিয়ে গেছে, জ্ঞান বিজ্ঞান আরও প্রসারিত হয়েছে, সংস্কৃতি বাড়ছে, স্মার্টফোনের সংখ্যা প্রায় সর্বোত্র চলে গেছে। ফলে কেন ১০ বছরের পরিবর্তে স্বল্প সময়ে শুমারি করতে পারব নাা? শুমারি কাজ রিয়েল টাইমে কর, অনেক দেশ এগুলো করছে। দশ বছর পরে মহাযজ্ঞ করে না গিয়ে টাইম টু টাইম জনশুমারি করতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পরিসংখ্যান বিভাগকে বলেছি অবাধ তথ্যপ্রবাহ সৃষ্টি করতে হবে। আমরা এমন কোনো ক্লাসিফাইড তথ্য ডিল করছি না যে সবার কাছে শেয়ার করা যাবে না। সাংবাদিকেরা সব সময় শুমারি নিয়ে সচেতন থাকবে। অন্যদিকে আমরাও সঠিক উত্তর দিতে প্রস্তুত থাকব।’
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ‘এবারের জনশুমারি অনুষ্ঠিত হবে ডিজিটালি। দেশ ডিজিটাল হয়েছে এটাই প্রমাণ। জনশুমারি ১০ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমার বিশ্বাস আমরা সফল হতে পারব।’
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে এই প্রথম ডিজিটালি শুমারি হচ্ছে। শুমারিতে দেশের সকল মানুষ যাতে তাদের তথ্য দিতে পারেন সে জন্য প্রচার-প্রচারণায় অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সবার সহযোগিতায় একটা সঠিক, স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ ডিজিটাল শুমারি সম্পন্ন করতে পারব বলে আশা করি।’
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন।
কর্মশালায় প্রশ্ন উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ড. দীপংকর রায়।