মুন্সীগঞ্জের বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তদন্তে কাজ শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের গঠন করা কমিটি।
কমিটির একমাত্র সদস্য সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হাই তালুকদার বুধবার মুন্সীগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। কথা বলেন ওই স্কুলের বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের সঙ্গে।
অধ্যক্ষ আব্দুল হাই বলেন, ‘আমি মামলার বাদী, স্কুল শিক্ষক, ছাত্র, আইনজীবী যারা এ ঘটনা দেখেছেন ও জানেন তাদের থেকে সব কথা শুনব, লিপিবদ্ধ করব। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে আমাকে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার কথা রয়েছে। আজ আমি সারাদিন স্কুলে অবস্থান করব।’
বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০ মার্চ দশম শ্রেণির ক্লাসে বিজ্ঞানের বিভিন্ন দিক নিয়ে ক্লাসে আলোচনা করেন হৃদয় মণ্ডল। তিনি ধর্মকে একটি ‘বিশ্বাস’ এবং বিজ্ঞানকে ‘প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। গোপনে তার অডিও ধারণ করে এক শিক্ষার্থী।
ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদের কাছে ওই শিক্ষকের নামে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ দেয়। প্রধান শিক্ষক কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তিন দিনের মধ্যে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে জবাব দিতে বলেন। তবে এর আগেই ২২ মার্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা জোটবদ্ধ হয়ে হৃদয় মণ্ডলের শাস্তির দাবিতে স্কুলে মিছিল বের করে।
বিদ্যালয় চত্বরের পাশের রিকাবীবাজার এলাকাতেও মিছিল হয়। প্রধান শিক্ষক পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের খবর দেন। স্কুলে গিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। তবে ভেস্তে যায় সেই আলোচনা। একপর্যায়ে হৃদয় মণ্ডলকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর রাতেই হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা করেন স্কুল সহকারী মো. আসাদ।
মামলায় গত রোববার জামিনে মুক্ত হন হৃদয় মণ্ডল। তাকে ৫ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহারাত আক্তার ভূঁইয়া।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সে সময় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ অস্বীকার করেন বিজ্ঞানের এই শিক্ষক। কী কারণে এই অভিযোগ তোলা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারছি না কী ঘটছে, স্কুলে অভ্যন্তরীণ রেষারেষি থেকেও হতে পারে, প্রাইভেট পড়ানো নিয়েও হতে পারে।’