রাজবাড়ীতে হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১২ ঘণ্টায় সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৬৫ জন। জায়গার সঙ্কুলান না হওয়ায় ওয়ার্ডের বাইরে হাসপাতালের বারান্দাতেও বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।
তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।
কী কারণে জেলায় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে তা জানতে মঙ্গলবার ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করে রাজবাড়ী সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, ‘আজ দুপুরেই কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে।’
তিনি জানান, সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. শামিম আহসানকে প্রধান করে টিমটি গঠন করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন, আরএমও ডা. আব্দুর রহমান, ডা.কানিজ ফাতেমা, ডা.আবু হানিফ ও ডা. সেলিম মিয়া।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এস এম এ হান্নান জানান, কী কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে তা বলা সম্ভব নয়, তবে পানি থেকে হতে পারে। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে সিট মাত্র ১২টি। এই সিট পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর ফ্লোরে ১০ জনকে রাখার মতো ব্যবস্থা আছে। গত চার-পাঁচ দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১৫ জন। এর মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় গেছে ৪৫ জন। হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে ৬৫ জন। বেশির ভাগ রোগী ডায়রিয়া ও বমি নিয়ে হাসপাতালে এসেছে।
সদর উপজেলার বিনোদপুর থেকে ফরিদা বেগম এসেছেন তার ১০ বছরের মেয়ে সাদিয়া আক্তারকে নিয়ে। তিনি জানান, ৪ দিন ধরে ছোট মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি তিনি। আজ বড় মেয়েকে ভর্তি করেছেন। এই কয়েক দিন হাসপাতালে থেকে তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
শ্রীপুর থেকে আজ সকালে হাসপাতালে এসেছেন হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সকালে এসে সিট পাইনি। বাহিরেই স্যালাইন নিয়েছি। ঘণ্টাখানেক পর সিট পেয়েছি। এ ছাড়া ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ওয়াশরুম সংকট থাকায় সবার অনেক কষ্ট হচ্ছে।’
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত সিরিয়র স্টাফ নার্স মিনতি রায় চৌধুরী জানান, রোগীর চাপে তারা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
সিভিল সার্জন ইব্রাহিম টিটন বলেন, ‘আমরা সাধ্যমতো সবাইকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে অতিরিক্ত নার্স দেয়া হয়েছে। ডায়রিয়া আগের থেকে ৭-৮ গুণ বেড়েছে।’