বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থবিষয়ক চ্যাম্পিয়নস গ্রুপ অফ গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স (জিসিআরজি) প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘ মহাসচিব মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেন। এ সময় নানা ইস্যুতে ১২ মিনিট কথা বলেন তারা।
রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম।
বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য ও ভঙ্গুর জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে খাদ্য, জ্বালানি ও আর্থিক ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে বৈশ্বিক সংকট ব্যবস্থাপনায় জিসিআরজি গঠন করায় জাতিসংঘের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
ইন্দোনেশিয়া ও সেনেগালের প্রেসিডেন্ট এবং বার্বাডোজ ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী এই প্ল্যাটফর্মে যোগ দেয়ায় সন্তুষ্টি জানান শেখ হাসিনা। অন্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এই গ্রুপের লক্ষ্য পূরণেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জিসিআরজিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য একজন শেরপা (প্রতিনিধি) মনোনীত করার পাশাপাশি জাতিসংঘের ম্যান্ডেটের অধীনে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানান অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব এবং করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাত প্রসঙ্গও তাদের আলোচনায় উঠে আসে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এবং মহামারির অভিঘাতে খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া এবং সার্বিক অর্থনীতির ওপর এর বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিবকে অবহিত করেন শেখ হাসিনা।
বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে অবদান রাখতে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দেয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন সরকারপ্রধান। শান্তি রক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারত্বের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
গ্রুপের লক্ষ্য পূরণে উচ্চপর্যায়ের সংলাপ, পারস্পরিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বাড়াতে নিজের প্রস্তুতির কথাও জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানান তিনি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে বিশ্বজুড়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে জিসিআরজি গঠনে এগিয়ে আসে জাতিসংঘ। এই গ্রুপের মূল্য উদ্দেশ্য যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্বের দরিদ্র ও ভঙ্গুর জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেয়া। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা এই গ্রুপে যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন। গত ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জিসিআরজি গঠনের কথা জানান অ্যান্তোনিও গুতেরেস।