বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বয়ংক্রিয় বাজার ব্যবস্থাপনায় ঢুকছে দেশ

  •    
  • ১২ এপ্রিল, ২০২২ ২২:৫৬

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘বাজারে পণ্য মূল্যের উঠা-নামা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই সমস্যা কমোডিটি এক্সচেঞ্জের গুরুত্ব সামনে নিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় এটি সময়োপযোগী বড় পদক্ষেপ।’

দেশে প্রথমবারের মতো পণ্য কেনাবেচার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অব ইন্ডিয়ার (এমসিএক্স) সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে সিএসই।

রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমসিএক্স-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিএস রেড্ডি এবং সিএসই’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফারুক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কমোডিটি এক্সচেঞ্জ পণ্যের দামের অস্থিরতা কমাতে কাজ করবে। তাই এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।

ভারতে প্রথমবারের মতো ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করে এমসিএক্স। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ হলো এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে বিভিন্ন পণ্য কেনাবেচা হয়ে থাকে। সেই কেনাবেচাটা হয় কাগুজে বা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে। মূল পণ্যটি কোনো দোকান, গুদাম বা মাঠে থাকে। সেখান থেকে নির্দিষ্ট সময় পর এটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি বা হস্তান্তর হয়।

ধরা যাক, কমোডিটি এক্সচেঞ্জে আলু কেনাবেচা হলো। সরাসরি কৃষক বা হিমাগারের মালিক, যার মালিকানায় পণ্যটি রয়েছে, তিনি এই আলু বিক্রি করতে পারবেন। আর কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে যে কেউ এই আলু কিনতে পারবেন। আইনের মাধ্যমে এই আলু কেনাবেচার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারিত একটি সময় বেঁধে দেয়া হবে। ওই সময় ক্রয় আদেশটি যার হাতে থাকবে, তাকে বিক্রীত ওই আলু বুঝিয়ে দেয়া হবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল ইসলাম, সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম ও ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে পণ্য মূল্যের উঠা-নামা জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এই সমস্যা কমোডিটি এক্সচেঞ্জের গুরুত্ব সামনে নিয়ে এসেছে। তাই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর বিষয়টি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এটি বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় একটি বড় পদক্ষেপ।’

সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ‘কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে গ্রামীণ কৃষকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন। কৃষি খাতের উন্নয়ন হবে। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এতে ভোক্তারাও উপকৃত হবেন।’

তিনি জানান, চট্টগ্রামভিত্তিক একটি সংগঠন সেখানে বড় একটি গুদাম তৈরি করেছে। সংস্থাটি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের উন্নয়নে সিএসইর সঙ্গে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়াত-উল ইসলাম বলেন, ‘এক্সচেঞ্জ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। কারণ এটি কৃষকদের জন্য ভালো দাম নিশ্চিত করবে এবং দামের অস্থিরতা কমবে। ফসল তোলার আগেই কৃষকরা তাদের পণ্যের দাম জানতে পারবে এবং ব্যবসায়ীরাও জানতে পারবে কার কাছ থেকে তারা পণ্য কিনবে।

‘পণ্য বেচাকেনার এই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি আমাদের সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা উন্নত করবে। কোল্ড স্টোরেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবে। ফলে উন্নয়নের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।’

বিএসইসির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে অধ্যাপক শিবলী বলেন, ‘এই ব্যবস্থা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আগামীকালই সবকিছু ঘটবে না। তবে আমরা আশা করি এটি শিগগির বাস্তবায়িত হবে।’

হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ‘পণ্য সংরক্ষণের আধুনিকীকরণ, মূল্য আবিষ্কার অর্থনীতির বিপ্লবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই কমোডিটি এক্সচেঞ্জ ব্যবস্থা তা সহজ করে তুলবে। এটি সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে সহায়তা করবে। কেউই দামে অস্থিরতা চায় না। এমসিএক্স পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের সম্ভাবনা রয়েছে সিঙ্গাপুরের মতো হওয়ার। কমোডিটি এক্সচেঞ্জ সেই পথে আরেকটি পদক্ষেপ।’

তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষ ব্যবস্থাপনা, সময়মতো বিতরণ ও পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখা এই অঞ্চলে একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং এই প্রক্রিয়া সেগুলো প্রশমিত করতে কাজ করবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, সিএসইর পরিচালক এমদাদুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম ফারুক প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর