বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টিএসসিতে জায়গা তৈরি করে একদল ছাত্রীর নামাজ

  •    
  • ১২ এপ্রিল, ২০২২ ১৭:০৫

টিএসসির উপদেষ্টা শিকদার মনোয়ার মুর্শেদ বলেন, ‘তারা এখানে নিয়মের বাইরে গিয়ে জায়গা নির্ধারণ করে বসেছে। আমরা তাদেরকে অফিশিয়াল প্রসেসের জন্য ১০ দিনের সময় চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শুনছে না। এ ক্ষেত্রে আমরা এখন এখান থেকে চলে যাব, তারা এরপর এখানে কী করবে তার দায়দায়িত্ব আমরা নিতে পারব না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) নামাজের স্থান তৈরির দাবি তোলার কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে আলাদা স্থান করে জোহরের নামাজ আদায় করলেন একদল ছাত্রী।

মঙ্গলবার দুপুরে টিএসসিতে পূর্ব থেকে থাকা ছেলেদের নামাজের স্থানের সামনে পর্দা টানিয়ে এর সামনের খালি জায়গায় মেয়েদের স্থান তৈরি করে তারা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন টিএসসির উপদেষ্টা অধ্যাপক শিকদার মনোয়ার মোর্শেদ, পরিচালক সৈয়দ আলী আকবরসহ অন্য কর্মকর্তারা।

তারা মেয়েদের নামাজের স্থান নির্মাণ করা হয়নি জানালে শুরু হয় বাগ্‌বিতণ্ডা। এ সময় ভিডিও ধারণকালে ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার লিটন ইসলামের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেন মনোয়ার মুর্শেদ। তার বিভাগীয় পরিচয়পত্রও নিয়ে নেয়া হয়। পরে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রতিবাদের মুখে তা ফিরিয়ে দেয়া হয়।

এরপর আগামী ২২ এপ্রিলের মধ্যে মেয়েদের নামাজের স্থান তৈরির আশ্বাস দিয়ে মেয়েদের তৈরি করা স্থান সরিয়ে ফেলতে অনুরোধ করেন মনোয়ার মোর্শেদ। এতেও মেয়েদের রাজি করানো যায়নি। পরে সেই স্থানেই নামাজ আদায় করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, ২২ এপ্রিলের মধ্যে টিএসসিতে মেয়েদের নামাজের স্থান বানানো হবে- সেটার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে এবং এর আগ পর্যন্ত তারা তৈরি করা স্থানেই নামাজ আদায় করবেন।

২২ এপ্রিলের মধ্যে মেয়েদের নামাজের সুনির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করা হবে- টিএসসির উপদেষ্টা মনোয়ার মুর্শেদ এমন প্রস্তাব দিলেও ছাত্রীরা তা প্রত্যাখ্যান করে

টিএসসির উপদেষ্টা শিকদার মনোয়ার মুর্শেদ বলেন, ‘তারা এখানে নিয়মের বাইরে গিয়ে জায়গা নির্ধারণ করে বসেছে। আমরা তাদেরকে অফিশিয়াল প্রসেসের জন্য ১০ দিনের সময় চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শুনছে না। এ ক্ষেত্রে আমরা এখন এখান থেকে চলে যাব, তারা এরপর এখানে কী করবে তার দায়দায়িত্ব আমরা নিতে পারব না।’

নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী স্মৃতি আফরোজ সুমি বলেন, ‘মেয়েদের নামাজের সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা গত সপ্তাহে ভিসি স্যার বরাবর স্মারকলিপি দিই। ভিসি স্যারের মৌখিক সম্মতি পেলেও প্রশাসনের দিক থেকে পজিটিভ কোনো স্টেপ না নেয়ায় আমরা আজ ছেলেদের নামাজের পশ্চিমে যে জায়গাটা ফাঁকা পড়ে থাকে, সেখানে পার্টিশন, পর্দা দিয়ে ঘিরে নামাজের ব্যবস্থা করেছি এবং জোহরের সালাত আদায় করেছি।

‘প্রশাসনের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী ১০ দিন অর্থাৎ ২২ তারিখের মধ্যে নামাজের স্থায়ী স্থান দেয়া হবে এই প্রত্যাশা রাখি।’

মেয়েদের নামাজের স্থানের ব্যবস্থা করতে সহযোগিতা করা ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহসভাপতি আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে টিএসসিতে নামাজের সমস্যায় ভুগছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা। তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি ছাত্র সংগঠন হিসেবে আমরা মেয়েদের সাথে থেকে স্মারকলিপি প্রদান এবং টিএসসিতে নামাজের স্থান স্থাপন পর্যন্ত সহযোগিতা করি। মেয়েরা জোহরের নামাজের মাধ্যমে টিএসসির নামাজের স্থানে নামাজ শুরু করেন।’

গত ৫ এপ্রিল দুপুরে টিএসসিতে নামাজের স্থান বরাদ্দের দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন কয়েকজন ছাত্রী। উপাচার্য দাবিটিকে ‘ভালো’ দাবি বলেও উল্লেখ করেন।

এরপর টিএসসিতে নামাজের স্থানের দাবিকে ধর্মান্ধ-প্রতিক্রিয়াশীল ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অপতৎপরতা দাবি করে গত ৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ছাত্রলীগ।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘মোল্লাতন্ত্রের বলি হওয়ার জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসিনি; মোল্লাতন্ত্রের কবর রচনার জন্যই আমাদের আসা।’

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ও তাঁবেদার গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।

এ বিভাগের আরো খবর