বাংলা নববর্ষ বরণ উপলক্ষে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। দেশে জঙ্গি তৎপরতা বেড়েছে এমন তথ্য পাওয়ার পর রমনার অনুষ্ঠান ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৯’ বরণ উপলক্ষে রমনা বটমূলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে এসে ডিএমপি কমিশনার এ তথ্য জানান।
এবার পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান দুপুর ২টার মধ্যেই শেষ করতে হবে বলে জানান শফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া যে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে সেখানে কেউ মুখোশ পরে কিংবা অন্য কোথাও থেকে সে শোভাযাত্রায় যুক্ত হতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
মঙ্গল শোভাযাত্রা ঘিরেও থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আর রমনার অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা জানান ডিএমপি কমিশনার।
বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের কারণ জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘২০০১ সালকে মাথায় রেখে বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া হচ্ছে। রিসেন্টলি কিছু বন্ধু রাষ্ট্র জঙ্গিদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ দিচ্ছে।
‘উপমহাদেশে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে ধারণা করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু রেডিক্যালাইজড সংগঠনের তৎপরতা লক্ষ্য করছি। সে কারণেই আমাদের বাড়তি নিরাপত্তা।’
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলার সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) জঙ্গিদের বোমা হামলায় ১০ জন নিহত ও অনেকে আহত হন।
সে মামলায় ২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বরে ১৪ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। মামলাটি এখনও বিচারাধীন।
সে বিষয়টিকে মাথায় রেখেই বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
জঙ্গি হামলার আশঙ্কা না থাকলে কোনো তথ্য উড়িয়ে দিচ্ছে না ডিএমপি। কমিশনার বলেন, ‘আমরা কোনো হামলার আশঙ্কা আমরা করছি না। যেহেতু নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে কোনো কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছি না। লোন উলফ একটা ছুরি বা ব্লেড নিয়ে হামলা করে, এটাতো একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।’
ডিএমপির নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রমনার বটমূলে প্রবেশে চেকপোস্ট থাকবে। চেকপোস্টে চেক না করে কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না। কোনো যানবাহন এই এলাকায় চলবে না। রমনা এলাকায় ডগ স্কোয়াড সুইপিং করেছে, সন্ধ্যায় করা হবে এবং আগামীকালও করা হবে। পুরো চত্বরে সিসিটিভি থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল থাকবে রমনার লেকে।’
ইভ টিজিং রোধে সাদা পোশাকে পুলিশের উল্লেখযোগ্য সদস্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে থাকবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।