পণ্যের মান সনদের পাশাপাশি হালাল সনদ দেয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এর মাধ্যমে ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে হালাল পণ্য রপ্তানির পথ সহজ হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও বিএসটিআই কর্মকর্তারা।
বিএসটিআই সোমবার অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের তিন প্রতিষ্ঠানের নয় পণ্যের অনুকূলে হালাল সনদ ইস্যু করেছে। বিএসিটিআই’র মহাপরিচালক ড. মো. নজরুল আনোয়ার এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে সনদ তুলে দেন।
মহাপরিচালক বলেন, ‘পণ্যের অনুকূলে হালাল সার্টিফিকেট দেয়ার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেছে বিএসটিআই। হালাল সংক্রান্ত ৩টি আন্তর্জাতিক মানকে বাংলাদেশ মান হিসেবে গ্রহণ করেছে।
‘এই মান অনুসারে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেট দেয়া হচ্ছে। ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর হালাল মানসনদ বিষয়ক সংস্থা স্মিক এর সদস্য হিসেবে এবং দেশীয় পণ্যের রপ্তানি সম্প্রসারণের জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
বিএসিটিআই তিন প্রতিষ্ঠানের ৯ পণ্যের হালাল সনদ ইস্যু করেছে। ছবি: নিউজবাংলা
ব্যবসায়ীরা জানান, হালাল পণ্য বিভিন্ন দেশেই প্রচলিত। ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী যে পণ্য গ্রহণে মুসলমানদের বাধা নেই, সেই পণ্যই হালাল হিসেবে স্বীকৃত। পণ্যের হালাল সনদ দিয়ে এর আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) সমালোচনার মুখে পড়েছিল। ২০০৭ সালে পাবনার বেঙ্গল মিটকে প্রথম হালাল সনদ দেয়া হয়।
এরপর আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরি, দক্ষ জনবলসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সুবিধা ছাড়াই শতাধিক পণ্যের হালাল সনদ দেয় ইফা। অনেক দেশ তাদের এ সনদ মানছিল না। অথচ সারা বিশ্বে হালাল পণ্যের বেশ চাহিদা আছে এবং প্রতিনিয়ত তা বাড়ছে। হালাল পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও থাইল্যান্ড এগিয়ে আছে। মুসলিমপ্রধান দেশ হয়েও বাংলাদেশ মান ও সনদের দুর্বলতায় সুবিধা করতে পারেনি।
বিতর্ক ও বহুবিধ সংকট এড়াতে এবার বিএসটিআই আনুষ্ঠানিকভাবে হালাল সনদ দেয়া শুরু করেছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দেয়া হালাল সনদের সিল। ছবি: সংগৃহীত
বিএসটিআই জানায়, হালাল সনদ দেয়ার এ প্রক্রিয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, এফবিসিসিআই, বিসিআই, ডিসিসিআই, ক্যাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ফার্মেসি বিভাগ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ ও আলিয়া ও কওমী মাদ্রাসার বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি যুক্ত আছে।
বিএসটিআই থেকে হালাল সনদ দেয়ার ফলে ব্যবসায়ীরা একটি পয়েন্ট থেকেই পণ্যের মান সনদ ও হালাল সনদ নিতে পারবেন। যা রপ্তানিসহ বাণিজ্যিক কাজকে সহজ করে তুলবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
সোমবার বিএসটিআই থেকে হালাল সনদ নেয়া পণ্যের মধ্যে আছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ইউনিট-১ এর ওয়েফার বিস্কুট, লজেন্স, প্লেইন কেক ও টফি, ইউনিট-২ এর ওয়েফার বিস্কুট, চকলেট ও বিস্কুট এবং ইউনিট-৩ এর ইনস্ট্যান্ট নুডুলস, চিপস ও ক্রেকার্স।