নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ‘গরীবের সুপারশপ’ চালু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সেখান থেকে নিম্ন আয়ের মানুষরা এক কেজি চাল কিনতে পারছেন মাত্র ১ টাকায়।
শুধু তাই নয়, চালের পাশাপাশি এক কেজি ডাল দুই টাকা, এক লিটার তেল ৬ টাকাতে কিনতে পারছেন তারা।
পাশাপাশি প্রতিদিন বেশ কিছু লোককে ইফতারিও দিচ্ছে সংগঠনটি।
বিভিন্ন সময় নানা ধরনের স্বেচ্ছাসেবী কাজ করে আলোচনায় আসা সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন রমজান মাস উপলক্ষে এই উদ্যোগ নিয়েছে।
উদ্যোগটির বর্ণনা দিয়ে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা সালমান খান ইয়াসিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘‘রমজান উপলক্ষে খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য ‘গরীবের সুপার শপ’ চালু করেছি। এই কার্যক্রম আমরা সপ্তাহে দুই দিন করছি। চলতি সপ্তাহে আমরা শনিবার করেছিলাম এবং আগামী বৃহস্পতিবার আবার করব। অবশ্য আমাদের নির্ধারিত কোনো তারিখ নেই, যখন প্রয়োজন পড়ে তখনই করি আমরা।’’
রমজানে যেহেতু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেশি, সে হিসেবে নিম্ন আয়ের মানুষদের সহায়তা করার জন্য এই উদ্যোগ নেয়া বলে জানান সালমান খান ইয়াসিন। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ভেতরে আমরা বিভিন্ন জায়গায় জরিপ করে দেখি এটা আসলে কার প্রয়োজন। এরকম দেখে আমরা তাদেরকে একটা টোকেন দেই। টোকেন দিয়ে বলে দেই এই সময়ে এখানে বাজার বসবে। আপনারা এখানে যাবেন। এর পরে তারা আমাদের নির্ধারিত জায়গায় আসেন। এসে আমাদেরকে টোকেন দেখিয়ে ১০ টাকা দিয়ে ৫০০ টাকার পণ্য কিনতে পারেন।’
পণ্যমূল্যের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকটা পণ্যের একটা প্রতীকী মূল্য রাখি। এই বাজারে চালের কেজি এক টাকা, ছোলা দুই টাকা, সয়াবিন তেলের লিটার ছয় টাকা, লবন এক টাকা কেজি, খেজুর এক টাকা কেজি, তিন প্যাকেট বিস্কিট এক টাকা, আটা-ময়দা এক টাকা কেজি, অ্যাঙ্কর ডাল এক টাকা কেজি, মসুরের ডাল দুই টাকা। এ সব পণ্যের মূল্য অনুযায়ী ১০ টাকার বাজার করতে পারেন তারা। ১০ টাকার বেশি জিনিস কিনতে পারবে না।’
ঈদেও এমন কার্যক্রমের বর্ণনা দিয়ে সালমান খান বলেন, ‘এখন রমজান উপলক্ষ্যে করলেও ঈদে আমরা কাপড় নিয়ে করব, ঈদের পর সবজি নিয়ে করব। গত সপ্তাহে আমরা এই বাজারের কার্যক্রম মিরপুরে করেছিলাম। বড় পরিসরে করার জন্য আমরা কারওয়ান বাজারকে বেছে নিয়েছি। কারওয়ান বাজার সেন্ট্রালে হওয়ায় সব জায়গার মানুষ কাভার করা যায়।’
বিদ্যানন্দ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ‘আনন্দের মাধ্যমে শেখা’ মূলমন্ত্র থেকেই ‘বিদ্যানন্দ’ নামের সৃষ্টি।
‘পড়ব, খেলব, শিখব’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের প্রত্যন্ত এক গ্রাম থেকে বিদ্যানন্দের কার্যক্রম শুরু হয়। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে পরে আরও নানামুখী উদ্ভাবনী প্রকল্প পরিচালনার মধ্য দিয়ে বিদ্যানন্দ আজ দেশে-বিদেশে আলোচিত ও অনুকরণীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে পরিচিত পেয়েছে।