বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কৃষকের ক্ষেতে রঙিন ফুলকপি, দেখতে শত লোকের ভিড়

  •    
  • ১১ এপ্রিল, ২০২২ ১৮:০০

কৃষিবিদ রাকিবুল হাসান বলেন, ‘রঙিন ফুলকপি খেতে সাদা ফুলকপির মতোই সুস্বাদু। কিন্তু রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন সি, ই, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটিনয়েড-জাতীয় বাড়তি কিছু উপাদান রয়েছে। এ ধরনের সবজি ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। হার্টের জন্যও উপকারী। তাই এটি খুব উৎকৃষ্ট মানের ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজি।’

দেশে যেসব ফুলকপি চাষ হয় সেগুলো দেখতে সাধারণত সাদা রঙের হয়। এবার নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস ফলিয়েছেন ভিন্ন রঙের ফুলকপি। আর সেটি দেখতেই ভিড় করছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা শ শ মানুষ।

সন্তোষ বিশ্বাস জানান, তিনি প্রতি বছর নিজের ২৫ শতক জমিতে ফুলকপি, লাউ, ঢ্যাঁড়স, বেগুন, টম্যাটো, শিম ও শসাসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজি আবাদ করেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা তাকে ‘ফসলের নির্ভরতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প’ এর আওতায় জামালপুরে অনুষ্ঠিত একটি প্রশিক্ষণে পাঠান। সেখানে গিয়ে ব্যক্তিমালিকানাধীন নার্সারিতে রঙিন ফুলকপির চারা দেখতে পান তিনি। আর তখনই ২২০টি চারা কিনে নিয়ে আসেন। এরপর স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে আড়াই শতক জমিতে চারাগুলো রোপণ করেন।

প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষ করে সফলও হয়েছেন কৃষক সন্তোষ বিশ্বাস।

তিনি জানান, রঙিন ফুলকপি চাষে তিনি কোনো প্রকার কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করেননি। শুধু জৈব সার ব্যবহার করেছেন। কপিক্ষেতে কোনো রোগবালাইও আক্রমণ করেনি।

সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, ‘আগে সাদা রঙের ফুলকপি চাষে যেমন খরচ হতো, রঙিন কপি চাষে তেমনই খরচ হয়েছে।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষক সন্তোষের ক্ষেতে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে শোভা পাচ্ছে বেগুনি ও হলুদ রঙের নজরকাড়া ফুলকপি। কপিগুলো আকারেও বেশ বড়সড়।

রঙিন ফুলকপি আবাদের খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন শ শ লোক তা দেখতে আসছেন। বড়দের সঙ্গে আসছেন শিশু-কিশোররাও। তারা এসে ফুলকপির ক্ষেতে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন।

রসুলপুর গ্রামের কৃষক লতিবুর রহমান সন্তোষ বিশ্বাসের ক্ষেত দেখে বলেন, ‘এই প্রথম রঙিন ফুলকপি দেখছি। কপিগুলো দেখতে খুব সুন্দর। চোখ জুড়িয়ে যায়। কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করলে আগামীতে আমিও তা চাষ করতে চাই।’

লতিবুরের মতো আরও অনেকে এমন উৎসাহ দেখাচ্ছেন।

বারহাট্টা সিকেপি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘রঙিন ফুলকপি চাষের খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লেগেছে। মনে হচ্ছে, একেকটা টবে সাজানো কৃত্রিম ফুল।’

সন্তোষ বিশ্বাস বলেন, ‘ফুলকপিগুলো দেখতে খুব সুন্দর হওয়ায় অনেকে ক্ষেত থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার মাঝে মাঝে বাজারেও পাঠাচ্ছি। তখন বাজারের ক্রেতারা এসে ভিড় করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় সাদা রঙের ফুলকপির চেয়ে একটু বেশিই দাম পাচ্ছি। আকারভেদে একেকটা কপি ১০০ টাকা দরে বেচতে পারছি। বাজারে তোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অনেকে শখ করে ছেলেমেয়েদের দেখানোর জন্যও কিনছেন।’

এরই মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার টাকার ফুলকপি বেচতে পেরেছেন বলে জানান সন্তোষ।

বারহাট্টার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাকিবুল হাসান বলেন, ‘রঙিন ফুলকপি খেতে সাদা ফুলকপির মতোই সুস্বাদু। কিন্তু রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন সি, ই, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটিনয়েড-জাতীয় বাড়তি কিছু উপাদান রয়েছে। এ ধরনের সবজি ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। হার্টের জন্যও উপকারী। তাই এটি খুব উৎকৃষ্টমানের ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এই সবজি।’

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সন্তোষ বিশ্বাসের দেখাদেখি এলাকার অনেকে রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। চারা বা বীজ পেলে আগামীতে আমরা আরও কিছু কৃষককে সহায়তা দেব। এটি চাষ করে কৃষকদের লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে। তা ছাড়া আমরা কৃষকের মাঝে নতুন ও আধুনিক কৃষি-প্রযুক্তি পৌঁছে দিতেই কাজ করছি। কেউ যদি স্বেচ্ছায় চাষ করে, তাকেও সহযোগিতা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর