আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকারের পতন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘লাগামহীন দ্রব্যমূল্য ও দুর্নীতি: অসহায় জনগণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অন্তরে মম শহীদ জিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটি।
সেলিমা রহমান বলেন, ‘বর্তমান স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে দেশ বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে এবং বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে নিতে হলে সরকারের পতন ছাড়া বিকল্প নেই।
‘মানুষের আর্তনাদ তাদের কানে পৌঁছায় না। তারা মানুষের টাকা লুটে নিয়ে বিদেশে বেগমপাড়া বানাচ্ছে। আসলে তারা বাংলাদেশের মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। এর কারণ হলো তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বাবাকে হত্যা করার পর দেশের মানুষ কেনো প্রতিবাদ করেনি? সে জন্য তখন থেকেই তাদের ক্ষোভ দেশের মানুষের ওপর।’
তিনি বলেন, ‘তারা ৯ বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। আসুন যার যার জায়গা থেকে আন্দোলন-সংগ্রামের প্রস্তুতি নিই। এখানে কে কী পেলাম, কী পেলাম না, সেই চিন্তা ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, কেন্দ্রীয় নেতা শিরিন সুলতানা, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, শাহজাহান মিয়া সম্রাট, নাদিয়া পাঠান পাপন, জিয়া নাগরিক ফোরামের লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ।
সেলিমা রহমান বলেন, ‘লাগামহীন দ্রব্যমূল্য, সরকারের দুর্নীতির কারণে অসহায় জনগণ। এই আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আসলে তারা তো দেশের স্বাধীনতা চায়নি। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনাতার বিরোধী। তারা হত্যা, গুম ও খুনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে নির্যাতন করছে। আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী গুম ও খুনের শিকার। অনেকের নামে মিথ্যা মামলা। ৩৫ লাখ নেতা-কর্মী আসামি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কী কষ্টে আছে তা সবাই জানেন। দুজন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তাদের সার, সেচ ও অন্যান্য সেবা দেয়া হয় না। একজন রিকশাচালক আত্মহত্যা করেছেন। কারণ তার রিকশা নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
‘আজকে মধ্যবিত্ত সমাজ বলতে কিছু নেই। উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সমাজ তৈরি হয়েছে। ভালো চাকরিজীবী মানুষও টিসিবির ট্রাকের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকছে। অন্যদিকে সরকার উন্নয়নের নামে মেগাপ্রজেক্টের মাধ্যমে লুটপাট করছে। ব্যাংক লুট হচ্ছে। মানুষের আয় কমেছে। সাধারণ মানুষ তাদের পরিবার গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে। সবদিক থেকেই এই সরকার মানুষকে নির্যাতন করছে।’
সেলিমা রহমান বলেন, ‘এই সরকার আমাদের তরুণ নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। তার সঙ্গে পরিবারের লোকজনকে দেখা করতে দিচ্ছে না। তিনি তো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে লিফলেট বিতরণ করছিলেন। তার বাবা তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা। এই সরকার সংবিধানের বাইরে সবকিছু করছে।
‘তারা লুটপাট ও দুর্নীতি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে পুষছে। দেশে মিথ্যাচার করে চলেছে এই সরকার। কিন্তু এভাবে বেশিদিন টিকে থাকা যাবে না। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, যাতে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন এবং দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন।’
তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান না হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসত না। তিনি না হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আসত না। তার নাম আরো বেশি করে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।’