জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দলের মধ্যে থেকে যারা দালালি করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি যে পর্যায়ের নেতাই হোন না কেন, আমরা ক্ষমা করব না।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর রিং রোডে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে রোববার জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘কেউ যদি দলছুট হয়ে অন্য কারও দালালি করতে চান তাহলে সেখানেই চলে যান। দলে তার কোনো জায়গা হবে না। কারণ নির্বাচনে মানুষ বিরোধী দল কিংবা সরকারকে ভোট দেবে। আমরা কোন জায়গায় আছি সেটা আমাদেরই পরিষ্কার করতে হবে।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের ভেতরের দু-চারজন হঠাৎ করে ব্যক্তিগত সুবিধা চিন্তা করে এদিক-ওদিক করছেন। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তারা শুধু জাতীয় পার্টির নয়, দেশেরও ক্ষতি করছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ যে ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চায় তা দিতে আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু কিছু দলীয় মানুষ আমাদের বাধাগ্রস্ত করছে। জাতীয় পার্টির রাজনীতিকে মানুষের কাছে বিপদগ্রস্ত করছে। তা থেকে দলকে মুক্ত করতে যা করা দরকার সেটা যত কঠিনই হোক আমরা করব। ভালো জিনিস করতে হলে তার মূল্য দিতে হয়। সেই মূল্য আমরা দেব। সেই ঝুঁকি আমরা নেব।’
আলোচনায় সরকারের সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মানুষের আয়-রোজগার কমে গেছে। তার সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ঢাকা শহরের যানজট। আমরা এক অনিশ্চয়তার মধ্যে নরক-যন্ত্রণা ভোগ করছি।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে এখন পর্যন্ত তিনটি দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি স্বকীয়তা নিয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছে। বিএনপি আওয়ামী লীগের জায়গায় এলে দেশ সঠিকভাবে পরিচালিত হবে এটা দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না। তাই জাতীয় পার্টিকে সে জায়গায় যেতে হবে, যে জায়গায় জনগণ আমাদের বিশ্বাস করবে। আমাদের রাজনীতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে কারণে চায় না জাতীয় পার্টি
জি এম কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেছেন। জানতে চেয়েছেন কেন এতে আমাদের আস্থা নেই। আমাদের আস্থা নেই এ কারণে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলা হয় তা জাতীয় পার্টি কোনোদিন পায়নি। দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সর্বাত্মকভাবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়েছে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু। বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য শরিফা কাদের, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, আবু হোসেন বাবলাসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।