গাজীপুর জেলা প্রশাসকের গাড়িচালক হিরা মিয়াকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশের তিন সদস্যের কমিটি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রত্যাহার করা পুলিশ সদস্যরা হলেন ট্রাফিকের কনস্টেবল ইউসুফ আলী ও নুর মোহাম্মদ।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় জানায়, রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের দুই মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন গাড়িচালক হিরা মিয়া। গাড়িটিতে জেলা প্রশাসকের স্টিকার ছিল। শহরের রাণী বিলাসমনি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে গাড়িটি পৌঁছালে ট্রাফিক পুলিশ তা ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। চালককে অন্য রাস্তা ব্যবহারের কথা বলে সেখানে থাকা ট্রাফিক পুলিশ।
গাড়িচালক হিরা মিয়া পুলিশকে জানান গাড়িতে ডিসির দুই মেয়ে আছে। এ পথেই তাদের বাসায় যেতে হবে। তখন চালকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে একজন ট্রাফিক পুলিশ গাড়িতে লাঠি দিয়ে কয়েকবার আঘাত করেন। তার প্রতিবাদ করলে পুলিশ হিরা মিয়াকেও মারধর করে। উত্তেজিত হয়ে ট্রাফিক কনস্টেবল ইউসুফ ও নুর মোহাম্মদ চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিতে চেষ্টা চালান।
অপ্রীতিকর এ ঘটনার পর হিরা মিয়া গাড়িটি ঘুরিয়ে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে যান। তখন ঘটনা জানাজানি হলে জেলা প্রশাসনের পরিবহন পুলের স্টাফরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা ঘটনাস্থল রাজবাড়ি সড়কে অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে শরিক হন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীরাও।
আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাসে কর্মচারীরা নিজ কর্মস্থলে ফেরেন।
বিকেলের আগেই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনা তদন্তে পুলিশ গঠন করে কমিটি।
কমিটির প্রধান করা হয়েছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। কমিটিতে আছেন অতিরিক্ত উপকমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খাইরুল আলম ও সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) মো. মাকসুদুর রহমান। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ডিসি (ট্রাফিক) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের আচরণগত ত্রুটির বিষয় প্রাথমিক তদন্তেই ধরা পড়েছে। এ জন্য তাদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবিরের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’