সরকার আন্তর্জাতিকভাবে প্রবল চাপের মুখে পড়ে অজানা আতঙ্কে ভুগছে বলে মনে করেন বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত এই অবৈধ সরকার দেশকে এমন এক খাদের প্রান্তে নিয়ে গেছে সেখান থেকে সরে আসার সুযোগ নাই।’
রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপি নেতা-কর্মীদের এই রমজান মাসেও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের হিড়িক শুরু করেছে। সরকার আন্তর্জাতিকভাবে প্রবল চাপের মুখে পড়ে এখন দেশের বিরোধী দলকে উচ্ছেদের মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।’
বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব বলেন, ‘আজ চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক মিথ্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া হবিগঞ্জ জেলাধীন লাখাই উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভুঁইয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফ্ফার এবং ঢাকা মহানগর কোতোয়ালী থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস সিকদারকে গত রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ফেনী জেলাধীন সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নুরের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আহত করেছে। সে এখন হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন।’
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, ‘হিংসা, সন্ত্রাসবাদ, বিরোধীদলের ওপর নিপীড়ণ-নির্যাতন, নিজেদের স্বার্থসর্বস্বতাসহ হরেক কিসিমের অনাচারে দেশকে ভরিয়ে তুলেছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, উদার মনোভাব, বিনা বাধায় নিজের পছন্দমতো বিশ্বাস নিয়ে চলার অধিকার হরণ করেছে এই আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে হিটলারের গ্যাস চেম্বারের ন্যায় বিষাক্ত চেম্বারে ঢুকিয়ে রাখতেই যেন তারা সব শক্তি প্রয়োগ করছে।’
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘চারদিকে সরকার পতনের আওয়াজ উঠছে। বিশ্ববিবেক ও জনগণকে ধোকা দিয়ে ও জুলুম নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতা এক্সটেনশনের রাস্তা বন্ধ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে এবং দেশে শক্তিশালী একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
রিজভী বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার কায়েমের জন্য দিনের পর দিন হরতাল, ধ্বংসাত্মক জ্বালাও-পোড়াও, কাটো-মারো কর্মসূচি চালিয়েছিল, সেই তারাই আবার গায়ের জোরে তা সংবিধান থেকে মুছে দিয়ে ভোট নির্বাচনকেও বাকশালীকরণ করে কলঙ্ক রচনা করেছে। এই কলঙ্কের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, তা ছাইচাপা আগুনের মতো আর লুকোনা থাকবে না। তাদের সব কেলেঙ্কারি উন্মেচিত হয়ে পড়ায় এরা জনদৃষ্টি দিকভ্রান্ত করার জন্যই রমজান মাসেও নতুন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।