বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চার দিন পর থামল পতন, খরা কাটেনি লেনদেনে

  •    
  • ১০ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:৩৯

এ নিয়ে রোজার দ্বিতীয় দিন থেকে ১৩০ পয়েন্ট সূচক কমার পর প্রথমবারের মতো বাড়ল ২১ পয়েন্ট। দিন শেষে বেড়েছে ২১৭টি কোম্পানির দর, কমেছে ১১০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫২টি কোম্পানির দর। আগের সপ্তাহে বেশির ভাগ কর্মদিবসেই এক দিনে ৩০০ বা কাছাকাছি সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার দর হারায়।

রোজার প্রথম কর্মদিবসের পর টানা চার দিন সূচক পতনের পর নতুন সপ্তাহের প্রথম দিন সূচক বাড়ল দেশের পুঁজিবাজারে। সেই সঙ্গে বেশ কিছু দিন পর এক দিনে দুই শতাধিক কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে।

তবে পুঁজিবাজারে মন্দাভাবে লেনদেনের খরা কাটেনি। তিন কর্মদিবস পর ৬০০ কোটি টাকার ঘর ছাড়িয়েছে অবশ্য। লেনদেন হয়েছে ৬৬৬ কোটি ২৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা।

রোববার লেনদেনের শুরুতেই সূচক বাড়লেও পরে আগের সপ্তাহের মতোই শেয়ারগুলো দর হারাতে থাকে, কমতে থাকে সূচক। বেলা ১১টা ৬ মিনিটে সূচক আগের দিনের চেয়ে ৬ পয়েন্ট কমে যাওয়ায় আবারও গত সপ্তাহের চিত্র ফিরে আসার শঙ্কা তৈরি হয়।

তবে এখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ২১ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন। এ নিয়ে রোজার দ্বিতীয় দিন থেকে ১৩০ পয়েন্ট সূচক কমার পর প্রথমবারের মতো বাড়ল।

দিন শেষে বেড়েছে ২১৭টি কোম্পানির দর, কমেছে ১১০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫২টি কোম্পানির দর। আগের সপ্তাহে বেশির ভাগ কর্মদিবসেই এক দিনে ৩০০ বা কাছাকাছি সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার দর হারায়।

পর পর চার কর্ম দিবস সূচক পতনের পর রোববারের এই উত্থানেও খুব বেশি উচ্ছ্বাস নেই পুঁজিবাজারে

রোজায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ডিলাররা বড় বিনিয়োগ করবে- এমন একটি ঘোষণা আসে এই মাস শুরুর আগে আগে। আবার মার্চেই ঘোষণা আসে, বাজারে বিনিয়োগ বাড়াবে ব্যাংক, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি। এমনকি তালিকাভুক্ত নয়- এমন বিমা কোম্পানিকেও বিনিয়োগ বাড়ানোর নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

কিন্তু এসব ঘোষণা ও নির্দেশের বাস্তবায়ন নেই। বিপুল সংখ্যক শেয়ারের ক্রেতা পাওয় যাচ্ছে না।

গত সপ্তাহে বেশিরভাগ দিনেই শতাধিক কোম্পানি দর হারিয়েছে সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ বা এর আশেপাশে। রোববার এক থেকে দুই শতাংশের মধ্যে দর হারিয়েছে ৪২টি কোম্পানি, আর প্রাইস লিমিট না থাকায় একটির কমেছে তিন শতাংশের বেশি। এছাড়া ৪৯টি কোম্পানি দর হারিয়েছে এক শতাংশের নিচে।

বিপরীতে দর বাড়ার কোম্পানিগুলোর মধ্যে পাঁচটির দর বেড়েছে সর্বোচ্চ সীমা ও এর আশেপাশে। দুটির ৭ শতাংশ, চারটির ৬ শতাংশ, দুটির পাঁচ শতাংশ, ৮টির চার শতাংশ ও ১৫টির ৩ শতাংশের বেশি দর বেড়েছে।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকার বেশিরভাগ লোকসানি কোম্পানি

সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে, এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে ছয়টিই লোকসানি কোম্পানি, যেগুলো বছরের পর বছর ধরে লভ্যাংশ দিতে পারছে না।

এর বাইরে চারটি কোম্পানির একটি নতুন তালিকাভুক্ত, যেটি লেনদেন শুরু করার পর সাত কর্মদিবস দর বেড়েছে ১০ শতাংশ বা আশেপাশে। তবে দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেলেও শেয়ার লেনদেন হচ্ছে কমই।

বাকি তিনটির দুটি স্বল্প মূলধনি এবং একটি আর্থিক খাতের কোম্পানি, যেটির দর দ্রুত বাড়ছে।

এই তালিকার শীর্ষে ছিল মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, যার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। একই গ্রুপের আরে কোম্পানি মেঘনা মিল্পের দর বেড়েছে ৮.৩৭ শতাংশ। এই দুটি কোম্পানি কেন বছরের পর বছর লোকসান দিয়ে এসেছে, সেটি তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি।

লোকসানি অন্য চার কোম্পানির মধ্যে ইমাম বাটনের দাম ৯.৯১ শতাংশ, বিডিওয়েল্ডিংয়ের দর ৬.৬৩ শতাংশ, সাভার রিফ্রাকটরিজের দর ৬.৪৮ শতাংশ, এবং দুলামিয়া কটনের দর বেড়েছে ৬.৪৭ শতাংশ।

নতুন তালিকাভুক্ত জেএমআই হসপিটালের দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় ২০ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির দর সাত কর্মদিবসে দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা ৮০ পয়সা।

শীর্ষ দশের অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্বল্প মূলধনি এপেক্স ট্যানারির দর ৮.৩০ শতাংশ, সোনলী পেপারের দর ৭.৪৯ শতাংশ এবং আইপিডিসির দর বেড়েছে ৭.৪৩ শতাংশ।

ভালো লভ্যাংশ দেয়া ব্যাংকের ক্রেতা নেই

রেকর্ড ডেটে শেয়ারদর ১৭ টাকা ১০ পয়সা। লভ্যাংশ ঘোষণা হয়েছে সাড়ে ১৭ শতাংশ, আগের বছর লভ্যাংশ এসেছে ১৫ শতাংশ- এমন একটি কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতাই পাওয়া যাচ্ছে না রেকর্ড ডেট শেষে।

৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর কোম্পানিটির দর দাঁড়ায় ১৬ টাকা ৩০ পয়সা। এক দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ হিসেবে কমার সুযোগ আছে ৩০ পয়সা করে। দুই দিনে এই হিসাবেই কমেছে ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার তাও তিন লাখের বেশি শেয়ার বিক্রি হয়েছে, কিন্তু রোববার বিক্রি হয়েছে ২৭ হাজারের কম।

সবচেয়ে বেশি কমেছে অবশ্য পূবালী ব্যাংকের শেয়ারদর, যেটি গত বৃহস্পতিবার লভ্যাংশ ঘোষণার পর এদিন দরের সীমা ছিল না।

শেয়ার প্রতি ৪ টাকা ২৩ পয়সা আয় করে ১ টাকা ২৫ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণার পর শেয়ারদর কমল ৯০ পয়সা, শতকরা হিসেবে ৩.২২ শতাংশ।

শীর্ষ দশের সব কটি কোম্পানির দরই পতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে। পূবালী ছাড়া অন্যগুলো হলো জিবিবি পাওয়ার, ব্যাংক এশিয়া, হাওয়েল টেক্সটাইল, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল, পিটিএল, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, বিবিএস ক্যাবলস, এফবিএফআইএফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং আনলিমা ইয়ার্ন।

সূচক বাড়িয়েছে যারা

স্কয়ার ফার্মার দর ১.১৭ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচক বেড়েছে ৩.৪৬ পয়েন্ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১.৯৯পয়েন্ট সূচকে যোগ করেছে সোনালী পেপার। এদিন কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৭.৫ শতাংশ।

এরপরেই ১.৯২ পয়েন্ট বাড়িয়েছে সিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪.৭৮ শতাংশ।

এছাড়া ওয়ালটন হাইটেক ১.৯১ পয়েন্ট, ইউনাইটেড পাওয়ার ১.৮৩ পয়েন্ট, আইপিডিসি ১.৭৩ পয়েন্ট, ব্র্যাক ব্যাংক ১.২৫ পয়েন্ট, গ্রামীণফোন ১.০১ পয়েন্ট, ডেল্টা লাইফ ০.৯৫ পয়েন্ট এবং রেনাটা সূচকে যোগ করেছে ০.৭৯ পয়েন্ট।

এই ১০ কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৬.৮৪ পয়েন্ট

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ৩.১৪ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে রবি। কোম্পানিটির ১.২ শতাংশ দরপতনে এই পয়েন্ট কমেছে।

লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের ১.৩৯ শতাংশ দরপতনের কারণে সূচক পড়েছে ১.৯২ পয়েন্ট। এরপরেই পূবালী ব্যাংকের ৩.২৩ শতাংশ দর পতনের কারণে সূচক কমেছে ১.৩৯ পয়েন্ট।

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দরপতনে ০.৪১ পয়েন্ট, ব্যাংক এশিয়ার ০.৭ পয়েন্ট, এমজেএল বাংলাদেশ ০.৬৭ পয়েন্ট, ট্রাস্ট ব্যাংক ০.৫৩ পয়েন্ট, আইএফআইসি ০.৫১ পয়েন্ট, একমি ল্যাব ০.৫১ ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক সূচক কমিয়েছ ০.৪৭ পয়েন্ট।

অর্থাৎ এই ১০টি কোম্পানিই সূচক ফেলেছে ১০.৬৫ পয়েন্ট ।

লেনদেনের শীর্ষ পাঁচে যেসব খাত

আগের দিনের মতোই লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে প্রকৌশল খাত। ৬৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ২৫টি কোম্পানির, কমেছে ১২টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির দর। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

আগের কর্মদিবসে ৪২ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন করে চতুর্থ অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। আজ ৫৪ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেন করে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে খাতটি। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২টি কোম্পানির দর বেড়েছে। কমেছে ৬টির, আর দর অপরিবর্তিত থেকে লেনদেন হয়েছে ৬টি কোম্পানির।

বড় লাফ দিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে। ১৪টি কোম্পানির দর বাড়ার দিনে খাতটিতে হাতবদল হয়েছে ৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবসে মাত্র ২৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। এছাড়া ছয়টির দর কমেছে এবং তিনটির অপরিবর্তিত ছিল।

খাত হিসেবে সর্বোচ্চ ৩৬টি কোম্পানির দর বাড়লেও আগের কর্মদিবসের চেয়ে লেনদেন কমেছে বস্ত্র খাতে। ধারাবাহিক দুই কর্মদিবসে খাতটির লেনদেন কমল। বুধবার হাতবদল হয়েছিল ৬৯ কোটি টাকা। এরপর বৃহস্পতিবার লেনদেনে কমে দাঁড়ায় ৫০ কোটি ১০ লাখ টাকায়। আজ লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এছাড়া ১৩টির কমেছে। অপরিবর্তিত ছিল 9টির।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা আইটি খাতে লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। দর বেড়েছে সাতটির, কমেছে তিনটির ও একটির অপরিবর্তিত ছিল। বৃহস্পতিবারে লেনদেন হয়েছিল মাত্র ১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর