অর্থায়ন জটিলতায় পড়েছে নির্মাণের অপেক্ষায় থাকা ‘বঙ্গবন্ধু হেলিপোর্ট’। জাপানি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা অর্থায়নে রাজি না হওয়ায় এখন সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি করতে হবে দেশের প্রথম এ হেলিপোর্ট।
জাইকা পিছিয়ে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত হেলিপোর্টে অর্থায়নের কোনো উৎস বের করতে পারেনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
অর্থায়ন না মিললেও এরই মধ্যে রাজধানীর কাউলা এলাকায় হেলিপোর্টের জন্য নির্ধারণ করা স্থানে ভূমি উন্নয়নের কাজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বেবিচক। সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নেই করা হয়েছে কাজটি।
হেলিপোর্ট প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হেলিপোর্টের জন্য আমরা যে জায়গা নিয়েছি, সেটাতে আমরা ল্যান্ড ডেভেলপমেন্টের কাজ করে ফেলেছি। আমাদের ইচ্ছা ছিল এটা জাইকার ফান্ডে করার, থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে, কিন্তু থার্ড টার্মিনালের সঙ্গে এটা করার অনুমোদন জাইকা দেয়নি।
‘এ কারণে এখন এটা সরকারি বা বেসরকারি অর্থায়নে করতে হবে। সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট করে ফেলেছি। এখন ডিপিপি আমরা তৈরি করছি, তবে এতে কিছু পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। এটা আগে একভাবে হয়েছিল, এখন সরকারি ফান্ডে করার জন্য অন্যভাবে করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা যদি আমরা নিজস্ব টাকায় করি, তাহলে দুই বছরের মধ্যে করা সম্ভব, কিন্তু এখন সমস্যা হলো, এটার ফান্ড এভেইলিবিলিটি। আমরা এখনও এটা জোগাড় করতে পারিনি।’
বেবিচক চেয়ারম্যান জানান, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের অনেকে এতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
দেশে বর্তমানে ১০টি প্রতিষ্ঠানের ৩০টি হেলিকপ্টার বাণিজ্যিক সেবা দিয়ে আসছে। এর পাশাপাশি এগুলো ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এর মধ্যে স্কয়ার লিমিটেডের তিনটি, মেঘনা এভিয়েশনের চারটি, আর অ্যান্ড আর এভিয়েশনের সাতটি, সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনসের চারটি, বসুন্ধরা এয়ারওয়েজের চারটি, ইমপ্রেস এভিয়েশনের একটি, বিআরবি এয়ার লিমিটেডের দুটি, বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের একটি, পারটেক্স এভিয়েশন ও বিসিএলের দুটি করে হেলিকপ্টার বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বেবিচকের হিসাব অনুযায়ী, কয়েক বছর আগেও প্রতি মাসে হেলিকপ্টারের ফ্লাইটসংখ্যা ছিল ১ হাজারের মতো, কিন্তু এখন প্রতি মাসে ৫ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে।
হেলিকপ্টারের ফ্লাইটসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিঘ্ন ঘটছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উড়োজাহাজ চলাচলে। এ কারণে হেলিপোর্ট নির্মাণে আগ্রহী হয় বেবিচক।
হেলিপোর্ট নির্মাণের জন্য রাজধানীর খিলক্ষেতের কাউলা এলাকায় প্রায় ৩৫ একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়। এর প্রাথমিক নকশাও এরই মধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বেবিচক জানায়, বঙ্গবন্ধু হেলিপোর্টে অন্তত ৮০টি হেলিকপ্টার রাখার ব্যবস্থা থাকবে। একই সময়ে একাধিক হেলিকপ্টার ওঠানামার প্রযুক্তিও সংযুক্ত থাকবে এতে।