১৬ লাখ মানুষের খুলনা নগরীতে খাবার পানির সংকট চরমে ধারণ করেছে। ভূগর্ভের পানির স্তর প্রায় ৩০ ফুট নিচে নেমে গেছে। খাওয়ার পানির অভাবে নগরীতে চলছে হাহাকার।
নগরীর পানি সংকট নিরসনে ময়ূর নদ বাঁচানোর দাবি জানিয়েছে পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চ নামের সংগঠন।
শনিবার দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে পানি ব্যবস্থাপনার তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে ময়ূর নদ বাঁচানোর দাবি তোলেন মঞ্চের নেতাকর্মীরা।
নগরীতে পানির সংকটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। সুপেয় পানিসংকট নিরসনে তারা ময়ূর নদের সঠিক সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক সুতপা বেদ বলেন, ‘খুলনা নগরীতে ১৫-১৬ লাখ মানুষ বাসবাস করে। ওয়াসা সাত লাখ মানুষের পানি সরবরাহ করে। সেই পানি আবার নোনা ও ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত।’
তিনি বলেন, ‘শহরের সামর্থ্যবানরা নিজ খরচে সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে পানি সমস্যার সমাধান করছে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। শহরে পানির স্তর কোথাও কোথাও ২৫-৩০ ফুট নিচে নেমে গেছে।
‘ভূগর্ভস্থ পানির আধার টিকিয়ে রাখতে হলে ভূপৃষ্ঠে যথেষ্ট পরিমাণে জলাধার থাকা দরকার। খুলনা শহরে ব্যক্তিমালিকানার জলাশয়ের সংখ্যা খুবই কম।’
তিনি আরও বলেন, ‘নগরীর পূর্ব পাশে আছে প্রবহমান ভৈরব ও রূপসা নদী। পশ্চিমে প্রায় বন্ধ ময়ূর নদ। এই নদটি মরতে বসেছে। ময়ূর নদের ওপর অপরিকল্পিত বাঁধ, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরি করা হয়েছে। এর সংযোগ খালগুলো দখল করে আবাসন ব্যবসা চলছে। এসব কারণে উজানের সঙ্গে ময়ূরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে সুতপা আরও বলেন, ‘ময়ূর নদ টিকিয়ে রেখে মিষ্টি পানির আধার গড়ে তোলার কথা অনেক দিন ধরে শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পানি নীতিতে বলা আছে, যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতি স্তরের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। অথচ পানি সমস্যা সমাধানে বা ময়ূর নদ ব্যবস্থাপনায় কী প্রকল্প গৃহীত হতে যাচ্ছে, তা আমরা জানি না।’
ময়ূর নদের পানির বায়োলজিক্যাল স্ট্যাটাস নিরীক্ষণ করে পর্যায়ক্রমিক ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার দাবি জানান সুতপা বেদ।