বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধনী-গরিব মিলে ইফতার করেন যেখানে

  •    
  • ৯ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:৫৩

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমাকে বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি এখানে এসেছি। কারণ সাধারণ মানুষের সঙ্গে বসে ইফতার করা আমাদের হয় না। এটা একটা বিশাল অনুভূতি। আমি মনে করি, সবার অন্তত একবার সাধারণ মানুষের সঙ্গে ইফতার করা উচিত। তাহলে বুঝতে পারবেন সাধারণ মানুষের কষ্ট। এই অনুভূতিকে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।’

ইফতারির ঠিক আগ মুহূর্তে কারওয়ান বাজারে ধনী-গরিব, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু সবাই এক কাতারে বসে আছেন। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ‘সবাই মিলে বাংলাদেশ’ ব্যানারে স্বেচ্ছাসেবকরা সবার কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন ইফতারি।

শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনও সাধারণ মানুষের কাতারে বসে ইফতার করছেন। এমনকি স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্বও পালন করেন।

তিনি বলেন, ‘আমাকে বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি এখানে এসেছি। কারণ সাধারণ মানুষের সঙ্গে বসে ইফতার করা আমাদের হয় না। এটা একটা বিশাল অনুভূতি। আমি মনে করি, সবার অন্তত একবার সাধারণ মানুষের সঙ্গে ইফতার করা উচিত। তাহলে বুঝতে পারবেন সাধারণ মানুষের কষ্ট। এই অনুভূতিকে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না।’

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ মানুষের নেতা ছিলেন। তিনি সাধারণ মানুষকে জাগ্রত করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। এই কাজের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে আরও জাগ্রত করেছে।’

এই সংগঠনে যারা কাজ করেন সবাই স্বেচ্ছাসেবক। এখানে প্রধান বলতে কেউ নেই। সবাই যার যার অবস্থান থেকে কাজ করেন।

কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক জানান, এখানে প্রতিবার ইফতারির আয়োজন করা হয়। পূজার সময় একই জায়গায় পূজারও আয়োজন হয়। অন্যান্য বছর ইফতারি ব্যাংক করা হয়েছিল। সেখানে সাধারণ মানুষ এসে ইফতার দিয়ে যেতেন। যারা একটু দরিদ্র বা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন ইফতার কিনতে পারছেন না, তারা এখান থেকে ইফতার নিয়ে যেতেন। কিন্তু একপর্যায়ে ইফতার নেয়ার মানুষের সংখ্যা বেশি দেখা যায়।

তারা আরও জানান, পরে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এখানে একটা বড় ভূমিকা রাখে। তারা প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন শ মানুষের ইফতারি দিতেন এখানে। বাকিটা সাধারণ মানুষ যারা ইফতারি দিয়ে যেতেন সব মিলিয়ে হয়ে যেত।

লাইন ধরে ইফতারি না নিয়ে সবাই বসে ইফতার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবার। যাতে দরিদ্র-ধনীর ফারাকটা না থাকে।

কারওয়ান বাজার এলাকার ভাসমান ও সাধারণ মানুষরা মূলত এখানে ইফতার করেন। মনোয়ারা বেগম তার ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এসেছেন এখানে ইফতারি করতে। তিনি কারওয়ান বাজারে পড়ে থাকা সবজি কুড়িয়ে বিক্রি করেন।

মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার পরিবারে একটা ছেলে আর আমি। আজকে তিন দিন আসলাম এখানে ইফতার করতে। এখানে ইফতার করতে ভালোই লাগে। যারা আয়োজন করেছে তারা ভালো কাজ করেছে। তাদের ধন্যবাদ। তাদের জন্য দোয়া করি।’

কারওয়ান বাজারে সবজি বিক্রেতা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই গ্রামে থাকে। আমরা যারা একসঙ্গে কাজ করি এ রকম অনেকেই এখানে আসছে ইফতার করতে। দুই দিন এখানে ইফতার করছি।’

সাচ্চু মিয়া বলেন, ‘কারওয়ান বাজারে লেবারের কাজ করি। পরিবার গ্রামে থাকে। এখানে নিয়মিত ইফতার করি। ভালোই লাগে।’

এটিএন নিউজের নির্বাহী সম্পাদক মুন্নি সাহা সেখানে স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। তিনি জানান, তিনি নিজেও এখানের একজন স্বেচ্ছাসেবক।

মুন্নি সাহা বলেন, ‘আজকে ছয় থেকে সাত শত মানুষকে খাবার দিয়েছি। আমাদের এখানে কোনো বিশেষ বা প্রধান অতিথি নেই। আমি আজকে খুবই গর্বিত, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইন কর্মকর্তা বসে ইফতার করছেন সাধারণ মানুষের কাতারে। আমি এখন কথা বলছি একজন ভলেন্টিয়ার হিসেবে।’

ইফতারের অর্থের উৎসের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিশ্চই অনেকের প্রশ্ন এত খাবার কোথা থেকে আসছে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের নাম আমরা সবাই জানি। বিদ্যানন্দ দেশের প্রতিটি মানুষের ফাউন্ডেশন। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে আমরা ফান্ড দিতে চাইলে দিই। কাজ করতে চাইলে আবেদন করি। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনই এখানে প্রধান ভূমিকা রেখেছে।

‘আজকে আমাদের সঙ্গে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বাচ্চারাও আছে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দেশে প্রতিদিন ১২ হাজারের মতো মানুষকে ইফতার দেয়া হয়। করোনার সময় আমরা যেটা করেছিলাম নো মাস্ক, নো ইফতার। এবার তো মাস্কের কড়াকড়ি নাই, তাই এই স্লোগানে (সবাই মিলে বাংলাদেশ) ইফতার হচ্ছে এবার।’

এ বিভাগের আরো খবর