রাজধানীর মালিবাগে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী শিশু তাওসিফ আহনাফকে সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের কর্মীদের মারধরের ঘটনার বিচার চেয়েছে পরিবার। ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শনিবার দুপুরে মানববন্ধন করা হয়েছে।
মানববন্ধনে শিশুটির বাবা সুরুজ মিয়া বলেন, ‘আমার বাচ্চার বয়স ১৫ বছর। তবে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তার আচরণ ছয় বছরের শিশুর মতো। সে মালিবাগের কল্যাণী ইনক্লুসিভ প্রাইমারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
‘প্রতিদিনের মতো ২৯ মার্চ স্কুলে নেয়ার পথে গেটের সামনে থেকে সে স্কুলে না যাওয়ার বায়না ধরে। ওকে বুঝিয়ে রেখে স্কুলের গেটে নামিয়ে আমি একটু এগিয়ে যাই। তখন ও পেছন থেকে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে অফিসে যেতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘আমার প্রতিবন্ধী সন্তানের এমন শিশুসুলভ আচরণ দেখে পাশেই সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে তিনটি মেয়ে হাসাহাসি করছিল। তা দেখে আমার ছেলে রেগে এগিয়ে গেলে মেয়েগুলো চিৎকার করে দৌড়ে কলেজের ভেতর চলে যায়। তাওসিফও তাদের পেছনে গেলে ওই মেডিক্যাল কলেজের সচিব মহিন উদ্দিন তাকে মারধর শুরু করেন। আমি সেখানে গিয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বলে থামানোর চেষ্টা করলেও তিনি আমার ছেলের দুই গালে আরও দুটি থাপ্পড় দেন। আমি প্রতিবাদ করলে সিকিউরিটি গার্ডরা আমাকেও মারতে উদ্যত হয়। খবর পেয়ে তাওসিফের স্কুল থেকে শিক্ষক ও অভিভাবকরা এসে প্রতিবাদ করেন, যা পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।’
শিশুটির বাবা আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে ঢাকা কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
‘এ ঘটনায় মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজ কাটাছেঁড়া করে প্রধান ঘটনা আড়াল করা হয়েছে। কক্ষের ভেতর তারা আমার প্রতিবন্ধী সন্তানকে মারধর করেছে। কিন্তু সে ঘটনা ফুটেজে নেই। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
মানববন্ধনে তাওসিফের পরিবারের সদস্য ছাড়াও অটিজম নিয়ে কাজ করা সামাজিক সংগঠন ও বিশেষ শিশুরা অংশ নেয়।