সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানো হলো আজ থেকে দোকানে পাওয়া যাবে কাঁচা আমের জিলাপি। কী হবে আপনার প্রতিক্রিয়া? নিশ্চয়ই ভিন্ন এ জিলাপির স্বাদ চেখে দেখতে চান আপনিও?
জিলাপির এমন বিজ্ঞাপন দেখে রাজশাহীর ‘রসগোল্লা’য় ভিড় জমিয়েছেন অনেকে।
তাদের মধ্যে একজন আশরাফুল ইসলাম। এসেছেন নগরীর কুমারপাড়া এলাকা থেকে।
জিলাপি কিনতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘কাঁচা আমের জিলাপি’ শুনেই ভালো লেগেছে। স্বাদটা কেমন হবে বুঝতে প্রথম দিন চলে এলাম। এখন তো দেখছি আমার মতো অনেকেই এসেছেন। আজ কিনলাম আধা কেজি। দাম নিল ১২৫ টাকা। মানে প্রতি কেজি আড়াই শ টাকা। আগে খেয়ে দেখি স্বাদ কেমন, ভালো লাগলে আবারও আসব।’
সন্তানকে নিয়ে জিলাপি কিনতে আসেন জেরিন আক্তার নামে আরেক ক্রেতা।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিনই দেখছি অনেক চাপ। জিলাপি ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য অপেক্ষা করছি। আশা করছি ভালোই লাগবে। একটা নতুন ফ্লেভার পাওয়া যাবে নিশ্চয়।’
রাজশাহী শহরের ভদ্রা এলাকার মিষ্টির এ দোকান বেশ কয়কে দিন ধরেই আলোচনার তুঙ্গে রয়েছে তাদের ভিন্ন স্বাদের মিষ্টির কারণে। ঠিক এবারও তাদের এ কাঁচা আমের জিলাপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাড়া ফেলেছে।
এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ব্যাপারে জানতে নিউজবাংলার প্রতিবেদক কথা বলেন দোকানটির মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে।
জানা যায়, দুই খামারি বন্ধু মিলে চালু করেছেন মিষ্টির দোকানটি। একজন ‘সওদাগর এগ্রো’র মালিক আরাফাত রুবেল, অন্যজন ‘আবরার ডেইরি ফার্ম’-এর মালিক রবিউল করিম।
গত ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় তাদের এ যাত্রা। সফলতা পেয়ে চলতি মাসের শুরুতে রাজশাহী শহরের উপশহর এলাকায় রসগোল্লার নতুন একটি শাখাও চালু করেছেন তারা।
জানান, রমজানের ইফতারে ভিন্নতা আনার চেষ্টাতেই এ উদ্যোগ।
প্রথম রোজা থেকে রসগোল্লার দুই দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে মাসকলাইয়ের জিলাপি। কাঁচা আমের এই জিলাপিও ইফতারি আইটেম হিসেবে শুক্রবার বিকেল থেকে প্রথমবারের মতো বিক্রি হয়েছে।
জিলাপির কারিগর মাসুম আলী বলেন, ‘আগে কখনও আমের স্বাদের জিলাপি বানাইনি। এই আইডিয়াটা রসগোল্লার দুই স্বত্বাধিকারীর একজন আরাফাত রুবেলের। সাধারণ জিলাপি বানাতে যেসব উপকরণ লাগে তার সঙ্গে বাড়তি যোগ করা হচ্ছে ব্লেন্ড করা কাঁচা আম।
তিনি জানান, দোকানের প্রচারের প্রধান মাধ্যমই হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। শুক্রবার সকালে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান দেন, কাঁচা আমের জিলাপি তৈরি করবেন। এই খবরেই শুক্রবার বিকেলে এখানে ছুটে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন জিলাপি ভক্ত।
প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আরাফাত রুবেল বলেন, ‘ইফতারের বিশেষ আইটেম হিসেবে জিলাপি অনেকেরই পছন্দ। এখন আম উঠছে। আমরা চেষ্টা করছি জিলাপির আটার সঙ্গে কাঁচা আম গুঁড়া করে দিতে। এভাবে মানুষ কাঁচা আমের ফ্লেভার পাচ্ছেন। স্বাদেও ভিন্নতা আছে। এখনও আম বড় হয়নি। একেবারেই ছোট। এর পরও আমরা এটা বানানোর চেষ্টা করছি নতুন কিছু দিতে।
রুবেল আরও বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই খাবারের মানে এবং স্বাদে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছি। এটাও তারই একটি অংশ। এর আগে আমরা আমের মিষ্টি, খেজুর রসের মিষ্টিতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এবার এই জিলাপিতেও প্রথম দিনেই যে সাড়া পেয়েছি, তাতে আমরা আশাবাদী। ক্রেতারা জিলাপি কিনে স্বাদে এবং মানে যেন হতাশ না হন, তা-ই আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি জানান, জিলাপির স্বাদ নিতে প্রথম দিনে ক্রেতাদের মতামত নেয়া হয়েছে।
বলেন, ‘মতামত অনুযায়ী দ্বিতীয় দিনে আমরা আমের পরিমাণটা বাড়িয়ে দিচ্ছি।’
দাম ও বেচাকেনা কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতি কেজি কাঁচা আমের জিলাপি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা করে। প্রথম দিনে ক্রেতাদের ভালো সাড়া মিলেছে। অনেককেই জিলাপি দিতে পারিনি। সাত কেজি আটার জিলাপির সবই বিক্রি হয়েছে। আমরা আশাবাদী, আমাদের মিষ্টির মতো এই জিলাপিটাও মানুষ পছন্দ করবে।’
কাঁচা আমের জিলাপিটা চিনির রসে ও মাসকলাইয়ের জিলাপিটা খেজুর গুড়ের রসে ডোবানোর কারণে স্বাদে ভিন্নতা আসে, যা ক্রেতারা পছন্দ করছেন বলে জানান রুবেল।