টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগ করেছেন এক কলেজছাত্রী। তিনি এখন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার ইউএনও হিসেবে কর্মরত।
এ-সংক্রান্তে ওই কলেজছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া সেই ইউএনওর বিরুদ্ধে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে কলেজছাত্রী উল্লেখ করেছেন, ২০২১ সালে টাঙ্গাইলের বাসাইলে ইউএনও থাকার সময় ফেসবুকে পরিচয় হয় কলেজছাত্রীর। পরিচয়ের একপর্যায়ে তাকে সরকারি বাসভবনে নিয়ে যান ইউএনও। পরে টাঙ্গাইল কুমুদিনি কলেজের সঙ্গে পাওয়ার হাউসের পেছনে একটি বাসা ভাড়া নেন তারা। বাসা ভাড়া নেয়ার আগে তিনি নিজের সব তথ্য গোপন রাখেন এবং মিথ্যা পরিচয়ে বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসায় স্বামী-স্ত্রীর মতো দুই মাস সংসার করলেও বিয়ে করেননি ইউএনও।
কলেজছাত্রী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইউএনও মনজুর হোসেনের সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান এবং তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে যান। সেখানে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এরপর বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউএনও মনজুর হোসেন বিবাহিত হয়েও তিনি অবিবাহিত পরিচয় দিয়েছেন। আমি সরল মনে তার কথা শুনে বিশ্বাস করেছি। তিনি শুধু আমাকে ব্যবহার করেছেন, স্ত্রীর মর্যাদা দেননি।
‘একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হয়েও আমার সঙ্গে এ রকম করতে পারেন, এটা আমি কোনোদিন বিশ্বাস করিনি। আমার প্রাপ্য অধিকার চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে মুঠোফোনে ইউএনও মনজুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পরে কথা বলবেন জানিয়ে কল কেটে দেন।
বাসাইল উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, “মনজুর হোসেন বাসাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন। তার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। তিনি বাসাইল থেকে যাওয়ার পর আমাকে একদিন ফোন করে বলেন, ‘একটি মেয়ে আমার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি আপনি একটু দেখেন’।”
‘আমি ওই মেয়েকে ইউনিয়নের এক চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমার কার্যালয়ে নিয়ে আসি। মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা জানতে পারি। পরে মেয়েটি আমাকে বলে সে আইনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে। এরপর আমার অফিস কক্ষ থেকে চলে যায়।’
এ বিষয়ে কলেজছাত্রীর মা বলেন, ‘ইউএনও মনজুর হোসেন আমার মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমরা সামাজিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার মেয়ে কলেজে যেতে পারছে না। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ডক্টর আতাউল গণি জানান, অভিযোগের বিষয় নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা গতকাল বৃহস্পতিবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল।