রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনে অভিযান চালাচ্ছে; তেমনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও দেশে বিরোধী দলের ওপর আভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার সকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার বিরোধী দলকে পুরোপুরি নির্মূল করতে কাজ করছে। যেটাকে আমরা বলি পাঞ্চ করা, পানজিং অব দ্যা অপজিশন। ঠিক আজকে ধরেন, ইউক্রেনে রাশিয়া আক্রমণ করার পরে যেভাবে নির্মূল করে দিচ্ছে সেই একইভাবে…’
‘পাকিস্তান আমলে আমাদের এই বাংলাদেশে একটা জাতিকে নির্মূল করার জন্য যেমন নির্যাতন-নিপীড়ন-হত্যা সব কিছু চালানো হয়েছিল, পোড়ামাটির একটা অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, আজ ঠিক একইভাবে বাংলাদেশ থেকে বিরোধী দলকে নির্মূল করার জন্য সেই একই অভিযান চালানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যখনই বিরোধী দল কর্মসূচি নিয়ে মাঠে এসেছে তাদেরকে একইভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, মামলা দেয়া হয়েছে। কিছুদিন আগে দেখেছেন বাম জোট যে কর্মসূচিতে দিয়েছিল, সেখানেও একইভাবে তারা মামলা দিয়েছে, গ্রেপ্তার করেছে, মারপিট করেছে।
‘দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদে মতিঝিলে লিফলেট বিতরণকালে ইশরাককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন তারা মামলা দিয়েছে ৮৮ জনের বিরুদ্ধে। এরা কারা? এই ৮৮ জন হচ্ছেন মহানগর দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ। এদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এটা এখন সারা দেশেই কিন্তু চলছে। আমরা শুনেছি, তালিকা তৈরি করেছে সরকার।’
বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না বলেও অভিযোগ বিএনপি মহাসচিবের। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো আছে, সেই মামলাগুলোতে কি আছে? একটা হচ্ছে আমি ময়লার গাড়ি পোড়াচ্ছি, তারপর আপনার সিটি করপোরেশনের গাড়ি। আমার বিরুদ্ধে আছে সেক্রেটারিয়েটের ভেতরে মোটর সাইকেলের পেছনে গিয়ে বোমা মেরেছি …।
‘এই ছল-চাতুরি প্রতারণা করে গোটা জাতিকে একটা ভয়াবহ অন্ধকারের গহবরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটার বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। এভাবে একেবারে নির্মূল করার যে ভয়াবহ প্রচেষ্টা, এটা ফ্যাসিবাদ ছাড়া কোথাও হতে পারে না।’
‘নতুন ইসি নাটক করেই যাচ্ছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন নাটক করেই যাচ্ছে। সিভিল সোসাইটিকে ডাকছে, সাংবাদিকদের ডাকছে। তাদেরকে ডেকে খুব সুন্দর কথা বলছেন। নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার যিনি, উনি সুন্দর বাংলা বলেন। কথা বলার ভঙ্গিও সুন্দর।
‘এই জিনিসগুলো সবচাইতে ভয়াবহ। এই নাটকগুলো করা হচ্ছে। এই নাটকগুলো করে তারা আবার আরেক নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। এবার হয়ত আগের মতো নির্বাচন হবে না। কোন ধরনের নির্বাচন হবে? আগে তো আগের রাত্রে নির্বাচন হয়ে গেছে। এখন কী ৭ দিন আগে নির্বাচন হয়ে যাবে কি না জানিনা।’
গণমাধ্যম কর্মী আইন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরাও কম ভুক্তভোগী নন। ইতিমধ্যে আপনাদের অনেকেই নিহত হয়েছেন, মারা গেছেন। অনেককে জেলে যেতে হয়েছে সত্য কথা লেখার জন্যে। এখানে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে। এখন গণমাধ্যম কর্মী আইন করতে যাচ্ছে।
‘এই দেশ এখন সম্পূর্ণভাবে একনায়কতন্ত্র, কর্তৃত্ববাদী, এককথায় বলতে গেলে একটা ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতে পড়েছে। এই সরকারকে সরাতে না পারলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না।’