বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জানুয়ারিতে কার্ডে লেনদেন ২৬ হাজার কোটি টাকার

  •    
  • ৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:০৩

এখনও দেশের বড় অংশের মানুষের ব্যক্তিগত লেনদেন নগদ টাকায় হচ্ছে। আর্থিক খাতের মোট লেনদেনের তুলনায় কার্ডে লেনদেন সামান্য হলেও এটি দিনকে দিন বাড়ছে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে এলেও কেনাকাটায় কার্ডের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। করোনা আসার আগে যে পরিমাণ লেনদেন হতো, এখন তার চেয়ে দেড় গুণ বেশি লেনদেন হচ্ছে কার্ডে।

গ্রাহকরা এটিএম থেকে বেশি টাকা তুলছেন, খরচ করছেন বেশি।

করোনা আসার আগে ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ডে মাসে লেনদেন হতো ১৪ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ডেবিট কার্ডে লেনদেন ২৪ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি, আর ক্রেডিট কার্ডে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি।

ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনার প্রকোপ কমে আসায় জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক ধারায় ফিরেছে। আবার অর্থনীতির কর্মচাঞ্চল্যও ফিরে এসেছে। তাই মানুষ খরচও বেশি করছে।

এখনও দেশের বড় অংশের মানুষের ব্যক্তিগত লেনদেন নগদ টাকায় হচ্ছে। আর্থিক খাতের মোট লেনদেনের তুলনায় কার্ডে লেনদেন সামান্য হলেও এটি দিনকে দিন বাড়ছে।

বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে অনেক গ্রাহক কার্ড নিতে চাইতেন না। এখন অনেকে কার্ডে ঝুঁকছেন। সম্প্রতি কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার কারণে ই-কমার্সে লেনদেন অনেক কমে গেছে। সেটি না হলে কার্ডে লেনদেন আরও বাড়ত।

করোনার সময়ে প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকদের উৎসাহিত করেছে ব্যাংকগুলো। রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি খাতের সব ব্যাংকই এখন প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। এসব সেবায় যোগ হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম, অনলাইন সিআইবি রিপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রি-পেইড কার্ড, ভিসা কার্ড এবং বিভিন্ন প্রযুক্তির এটিএম। এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন ও জমা, রেমিট্যান্স বিতরণ, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ ও বেতন-ভাতা প্রদান সবই সম্ভব।

ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ও লেনদেন

২০২১ সাল শেষে ডেবিট কার্ড ছিল ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৯টি। এ বছরের জানুয়ারিতে সেটা বেড়ে হয়েছে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৭৪ হাজার ৬৬৮টি।

কার্ড বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনও। ডিসেম্বরে ডেবিট কার্ডে লেনদেন হয় ২৪ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে লেনদেন ২৪ হাজার ৭০১ কোটি টাকা। এর আগে কখনও ডেবিট কার্ডে এক মাসে এত লেনদেন হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১ সালের পুরোটা সময়ে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ও লেনদেন বেড়েছে। ওই বছরের জানুয়ারিতে কার্ড ছিল ২ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ৫২৬টি। এসব কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা। মার্চ শেষে কার্ডের সংখ্যা বেড়ে হয় ২ কোটি ২৪ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭টি। লেনদেনও বেড়ে হয় ২২ হাজার কোটি টাকা।

এর তিন মাস পর জুন শেষে ডেবিট কার্ডের ব্যবহার আরও বাড়ে। এ সময় কার্ড ছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ ৬৩ হাজার ৭০২টি। এসব কার্ডে ২১ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়।

সেপ্টেম্বর শেষে কার্ডের লেনদেন ও ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। এ সময় কার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ২ কোটি ৪২ লাখ ২৫ হাজার ১৬৪টিতে, লেনদেন হয় ২২ হাজার ৫২২ কোটি টাকার।

ডিসেম্বর শেষে কার্ড আরও বেড়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৯টিতে দাঁড়ায়। লেনদেন হয় ২৪ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকার।

ক্রেডিট কার্ড

ডেবিট কার্ডের লেনদেন বাড়লেও এ সময়ে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন কমেছে।

২০২১ সাল শেষে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৭৪ হাজার ৩৬২টি। জানুয়ারিতে সেটা সামান্য বেড়ে হয় ১৮ লাখ ৮৮হাজার ৯২৩টি।

অবশ্য ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন কিছুটা কমেছে। লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে ক্রেডিট কার্ডে রেকর্ড ২ হাজার ২২৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এর আগে কখনও ক্রেডিট কার্ডে এক মাসে এত লেনদেন হয়নি।

নভেম্বরে লেনদেন হয় ২ হাজার ৯২ কোটি টাকার। তার আগে লেনদেন কখনও ২ হাজার কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করেনি।

ক্রেডিট কার্ডের বিল সময়মতো দিতে না পারলে জরিমানার পাশাপাশি অনেক বেশি হারে সুদ দিতে হয়। ব্যাংকে সুদ হার ৯ শতাংশ হলেও কার্ডের সুদ ২০ শতাংশ পর্যন্ত আছে।

২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া অন্য সব ঋণে সুদ হার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মানে ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ সুদ হওয়ার কথা ১৪ শতাংশ। তবে এই নির্দেশনাও অমান্য করে অনেক ব্যাংকই বিভিন্নভাবে এর চেয়ে বেশি টাকা আদায় করত।

ফলে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কোনো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে ২০ শতাংশের বেশি সুদ নিতে পারবে না বলে নতুন নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটি ওই বছর ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়।

প্রি-পেইড কার্ড

২০২১ সাল পর্যন্ত দেশে প্রি-পেইড কার্ডের গ্রাহক ছিল ১১ লাখ ৫৪ হাজার ৯০১ জন। জানুয়ারিতে সেটা বেড়ে হয়েছে ১১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৫২ জন।

এ সময়ে এসব কার্ডে লেনদেন হয়েছে ২৩৩ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর