ঠাকুরগাঁও সদরের আকচা তাতীপাড়া গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী অধিকা রানী গৃহস্থালি কাজ আর তৃষ্ণা মেটানোর জন্য এতদিন ধরে কুয়োর পানি ব্যবহার করছিলেন।
অভাবের কারণে নলকূপ কিনতে পারেননি বলে প্রাচীন আমলের কুয়োর অস্বাস্থ্যকর পানি ব্যবহার করছিলেন তিনি। এ নিয়ে নিউজবাংলায় নলকূপ জোটেনি, দূষিত কুয়ায় মৃত্যুর হাতছানি - শিরোনামে সংবাদও প্রকাশ হয়।
সেই খবর প্রকাশের পর অধিকা রানী পেয়েছেন নলকূপ। আকচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ বৃহস্পতিবার দুপুরে তার বাড়ি গিয়ে নলকূপ ও তা বসানোর সরঞ্জাম রানীর হাতে তুলে দিয়েছেন।
রানী বলেন, ‘আর মাটির কুয়োর গন্ধ পানি পান করব না। এবার সন্তানদের নিয়ে তৃপ্তি করে নলকূপের পানি পান করব। আমি আনন্দিত আজ। খুব ভালো লাগছে।’
চেয়ারম্যান সুব্রত বলেন, ‘গত ২৯ মার্চ নিউজবাংলার ওই প্রতিবেদন আমার দৃষ্টিগোচর হয়। পরে খোঁজ খবর নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে তাকে নলকূপ, পাইপসহ যাবতীয় সরঞ্জাম দেই।’
অধিকা জানান, ৯ বছর আগে সড়ক দূর্ঘটনায় তার দিনমজুর স্বামী মারা যান। এরপর থেকে দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর ঘরেই আছেন। অভাবের সংসারে অনেক চেষ্টা করেও তিনি নলকূপ বসাতে পারেননি।
অধিকা বলেন, ‘সন্তানদের মানুষ করতে ১৫০-২৫০ টাকা হাজিরায় মাঠে কৃষি কাজ করি। তাই আট-দশ হাজার টাকা খরচ করে নলকূপ বসানো হয়নি৷ ঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে সেটাই জোরাতালি দিয়ে সন্তানদের নিয়ে থাকি।’
ওই কুয়ার পানির ওপর নির্ভরশীল রানীর আত্মিয় ও প্রতিবেশী প্রভাতি রানী। ৪৫ বছরের বয়সী প্রভাতি বলেন, ‘সবাই নলকূপে পানি পান করে আমরা পারি না। আমরা মাঠে কামলা দেয়া মানুষ। তাও দৈনিক কাম পাই না। টিউবওয়েল দিতে টাকা জমালেও থাকে না। অসুখের শরীরে চিকিৎসা নিতে হয়। বাসায় নাতনি আছে তিন বছরের। কুয়োর ভয়ে থাকি।’
প্রভাতি জানান, কুয়ার পানিতে দুর্গন্ধ। এতে ময়লা আবর্জনা গিয়ে পড়ে। এজন্য প্রায়ই তারা রোগে আক্রান্ত হন।
এখন নলকূপ পেয়ে তিনিও খুশি।