অনেক দিক দিয়ে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা ভালো বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের তো লোকের অভাব নেই। আমাদের ছেলে-মেয়েরা বাইরে শিক্ষা গ্রহণ করবে এবং আসবে। বরং অন্য বেশ কিছু দেশের চেয়ে বাংলাদেশের পজিশন এখন অনেক দিক থেকে ভালো। অনেক ভালো অবস্থায় আমরা আছি।’
গণভবনে বৃহস্পতিবার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’-এর তৃতীয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের মেধা পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে যে কথা শোনা যায়, তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আরেকটা বিষয় অনেকে বলেন আমাদের মেধা চলে যাচ্ছে, এটা নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তা করি না। কারণ একটা সময় যারা যায়, হয়তো এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে বাইরে যায়, টাকাপয়সা কামাই করে। আবার অনেকেই কিন্তু বাইরে যারা পড়াশোনা করছেন, তারা দেশে ফিরে আসছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অনেকে, নিউ জেনারেশন তারা কিন্তু চলে আসছে। এসে কাজ করছে। কারণ আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ফলেই কিন্তু কাজগুলো সহজ হয়ে গেছে। যে কারণে তারা এখন দেখে যে বাংলাদেশে বসেও তারা নিজেদের কাজগুলো ভালোভাবে করতে পারছে।’
দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে তারুণ্যের সংখ্যা বেশি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্টে যাবে। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিক্ষাদীক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য, অর্থনীতি সব দিক থেকেই আমরা এগোতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভসহ সব ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে এবং এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার দিকটাতেও খুব বেশি নজর দিতে হবে এখন। আসলে প্রযুক্তি আমাদের যেমন সুযোগও সৃষ্টি করে দেয়, অনেক সময় সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। সেদিক থেকে আমাদের নিরাপত্তার দিকটা আমাদের আরও নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা সব ক্ষেত্রে, একেবারে বাংলাদেশ ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই এটা আমাদের ভাবতে হবে এবং আরও (সতর্ক হতে হবে)।’
প্রযুক্তির উৎকর্ষ আরও বাড়বে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রতিদিনই নতুন নতুন চিন্তা আসবে। আমি এখন হয়তো ভাবছি, এটা বোধহয় প্রযোজ্য কিন্তু সেটা সামনে আরও যাবে। আমাদের সব সময় ওভাবে মাথায় রাখতে হবে।’
গবেষণা বাড়ানোর আবারও জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির উৎকর্ষতা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে। এ জন্য গবেষণার ওপরও আমাদের আরও গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের গবেষণা সব সময় দরকার। আমাদের গবেষণাগুলো সব সময় করতে হবে। আমরাও যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি।’
বাংলাদেশকে পরমুখাপেক্ষী দেখতে চান না জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকব কেন? আমাদের দেশের মানুষের মেধা আছে। সেটা বিকাশের সুযোগ করে দিলে, আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।’
যুব সমাজের দক্ষতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলছি। শুধু এ কথা চিন্তা করা না; বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের তরুণ সমাজকে আরও বেশি উপযুক্ত করে গড়ে তোলা, উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া, উপযুক্ত ট্রেনিং দেয়া বা তাদেরকে সেভাবে বা তাদের মনমানসিকতাও গড়ে তোলা, সেটাই আমাদের করতে হবে।’