থাইরয়েড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে সার্জারির পর এখন সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন তরুণ কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ। শরীরে ক্যালসিয়াম কমে যাওয়া ছাড়া তেমন বড় কোনো জটিলতা দেখা দেয়নি বলেও জানান তিনি।
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা কবি সুস্থ হয়ে সব কৃতিত্ব দিলেন নিজের পাঠক আর শুভানুধ্যায়ীদের।
নিজের ফেসবুকে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ কথা জানান তিনি।
গত ৩১ মার্চ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর দেন ইমতিয়াজ। পরদিন শুক্রবার ভারতের চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে তার সার্জারি হয়।
ওইদিন কবির ঘনিষ্ঠজন গদ্যকার কুশল ইশতিয়াক ফেসবুক পোস্টে জানান, সার্জারি শেষে ভালো আছেন কবি।
তিনি লেখেন, ‘ইমতিয়াজ ভাইয়ের সার্জারি শেষ হয়েছে। ভাবির কাছ থেকে জানা গেল, উনি ভালোই আছেন। সুস্থ আছেন। সার্জারির মাধ্যমে থাইরয়েডের রিমুভালও ভালো হয়েছে। অর্থাৎ অপারেশন সফল বলা যায়।’
তার পাঁচ দিন পর কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ নিজেই তার পাঠক, শুভানুধ্যায়ীদের বার্তা দিলেন।
কিছুটা সুস্থ অনুভবের পর নিজের কবিতার পঙ্ক্তি ‘সব মানুষই ঘরে ফেরে অন্য মানুষ হয়ে/চেনা নদী বদলে যায় সামান্য এক ঢেউয়ে’ দিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট দেন ইমতিয়াজ মাহমুদ।
সেই পোস্টের কমেন্টের ঘরে তিনি লেখেন, ‘আপডেট: আল্লাহর রহমতে চিকিৎসার প্রথম ধাপ প্রায় শেষ হয়েছে। অ্যাপোলোর ডাক্তারদের ধন্যবাদ। অনেকগুলো টিউমার ছিল। তারা থাইরয়েড পুরোটা ফেলে দিয়েছে। ক্যালসিয়াম লেভেল কমে যাওয়া ছাড়া এখন পর্যন্ত বড় কোনো জটিলতা দেখা দেয়নি।’
সব ঠিক থাকলে ছয় থেকে আট/দশ সপ্তাহ পর থেরাপি শুরু হবে বলেও উল্লেখ করেছেন কবি।
তিনি লেখেন, ‘থাইরয়েড ক্যানসার তুলনামূলক কম বিপজ্জনক হলেও আমার এক কাজিন গত বছর থাইরয়েড ক্যানসারে মারা যাওয়ায় আর আমার ভিন্ন অনেক রকমের জটিলতা থাকায় খুব বেশি আশাবাদী ছিলাম না।’
ফেসবুকে আর ফেরা হবে কি না তা নিয়েও নিজের মধ্যে সংশয় ছিল বলে উল্লেখ করেন এ সময়ের দারুণ জনপ্রিয় এই কবি। তিনি লেখেন, ‘এমনকি এ রকম একটা পোস্ট আর কখনও দিতে পারবো কি না, তা নিয়েও সংশয়ে ছিলাম।’
নিজের ভক্ত, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘আমি যে এই পোস্টটা দিতে পেরেছি, আমার মনে হয় তার পেছনে আপনাদের প্রার্থনা আর প্রশ্রয়ের অবদান সবার প্রথমে...।’
তবে এবারও তার পোস্টে কমেন্ট অপশন বন্ধ রেখেছেন কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ।
ইমতিয়াজ মাহমুদের জন্ম ১৯৮০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতক করেছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিতে কাজ করেছেন বছরখানেক। ২০০৬ সাল থেকে তিনি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এখন পর্যন্ত তার আটটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রকাশিত পেন্টাকল কাব্যগ্রন্থের জন্য কলকাতার কৃত্তিবাস পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।