বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘এ’ ক্যাটাগরিতে ঢালাও পতন, ‘মন্দ’ শেয়ারে অতটা নয়

  •    
  • ৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৫:১৪

টানা চার দিন সূচকের পতন হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। এই চার দিনে পড়ল ১৩০ পয়েন্ট। রোববার প্রথম কর্মদিবসে সূচক ১৪ পয়েন্ট বাড়লেও সেদিন শেয়ারগুলো দর হারায় ব্যাপকভাবে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত লভ্যাংশ না দেয়া ২৬টি কোম্পানির মধ্যে তিনটির লেনদেন বন্ধ। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে লেনদেন হওয়া বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম অপরিবর্তিত ছিল চারটির, কমেছে সাতটির আর বেড়েছে বাকি ১২টির দর।

১ থেকে ৯ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা অপেক্ষাকৃত কম মৌলভিত্তির কোম্পানির সংখ্যা ৮৯টি। এর মধ্যে দাম কমেছে ৪২টির, অপরিবর্তিত ছিল ১২টির দর, আর বেড়েছে বাকি ৩৫টির দর।

নতুন তালিকাভুক্ত এন ক্যাটাগরির ছয়টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে তিনটির দর, কমেছে বাকি তিনটির।

বাকি ২৬৪টি কোম্পানি ‘এ’ ক্যাটাগরির, অর্থাৎ তারা কমপক্ষে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এসব কোম্পানির মৌলভিত্তি তুলনামূলক ভালো। তবে এসব কোম্পানির যতগুলোর দর বেড়েছে, কমেছে তার তিন গুণের বেশি।

এসব কোম্পানির মধ্যে একটির লেনদেন বন্ধ, ২৭টির দর ছিল অপরিবর্তিত। বেড়েছে ৫৭টির দর, আর কমেছে বাকি ১৭৯টির দর।

সব মিলিয়ে কমেছে ২৩১টির দর, অপরিবর্তিত ছিল ৪৩টির দর আর বেড়েছে ১০৮টির দর। যদিও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বোর্ডে এই সংখ্যার হিসাবে কিছুটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ের কারণে কিছু কোম্পানির দর অপরিবর্তিত দেখালেও সেগুলোর দর হারিয়েছে বা বেড়েছে।

পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে ভালো কোম্পানির তুলনায় ‘মন্দ’ বা কম ভালো কোম্পানির শেয়ারে তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক অবস্থা দেখা যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার মিলিয়ে টানা চার দিন সূচকের পতন হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে। এই চার দিনে পড়ল ১৩০ পয়েন্ট। রোববার প্রথম কর্মদিবসে সূচক ১৪ পয়েন্ট বাড়লেও সেদিন শেয়ারগুলো দর হারায় ব্যাপকভাবে।

এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই শেয়ারদর কমতে থাকায় সূচক কমতে থাকে। এক পর্যায়ে বেলা ১২টায় সূচক কমে যায় ৫৯ পয়েন্ট। তবে শেষ দুই ঘণ্টায় শেয়ারগুলো হারানো দর অনেকটাই ফিরে পেতে থাকে। লেনদেন শেষ হওয়ার আগে আগে আগের দিনের চেয়ে ৭ পয়েন্ট কম ছিল সূচক। শেষ সময়ের সমন্বয়ে সেখান থেকে কমে আরও ১৪ পয়েন্ট।

বৃহস্পতিবার শেষ বেলায় হারানো সূচক কিছুটা ফিরে পায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ

লেনদেন এদিনও ছিল খুবই কম। যদিও আগের দিনের চেয়ে ২৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা বেড়ে তা কোনো রকমে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আগের দিন লেনদেন ছিল ৪৯০ কোটি ৫০ লাখ ২৩ হাজার টাকা, যা ২০২১ সালের ১১ এপ্রিলের পর সর্বনিম্ন।

টানা পড়তে থাকা বাজার ঘুরে দাঁড়াবে- এমন আশ্বাসের কথা নানাজন বলে এলেও তেমন কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আস্থাহীনতার কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার না কিনে বাজার পর্যবেক্ষণে আছে।

টানা পড়তে থাকা বাজার ঘুরে দাঁড়াবে- এমন আশ্বাসের কথা নানাজন বলে এলেও তেমন কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

বিনিয়োগ বাড়ানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আস্থাহীনতার কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার না কিনে বাজার পর্যবেক্ষণে আছে।

স্টক ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও মতে, বিনিয়োগকারীরা বিপুল পরিমাণ বিক্রয়াদেশ দিয়ে বসিয়ে রাখলেও ক্রেতা নেই। শেয়ারদর ২ শতাংশ কমলেই ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে শেয়ারের চাহিদা তৈরি না হওয়ায় দর পরের দিনও কমছেই।

আবার শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বলেন, এভাবে বিনিয়োগকারীরা কোনো কোম্পানির শেয়ার না কিনে আরও এক দিন পর্যবেক্ষণের নীতি নিয়েছে।

রমজানে পুঁজিবাজারে ক্যাশ ফ্লো কমে গেছে বলে জানিয়েছেন এক্সপো ট্রেডার্সের সিইও শহিদুল হোসাইন। তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ, অনেকেরই সাইড বিজনেস। একজন আড়তদার, বা বস্ত্র ব্যবসায়ী, যার শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ আছে, তিনি তো এখানে টাকা ফেলে রাখবে না। অন্য জায়গায় খাটাবে। এগুলোই বাজারে লেনদেন কমার কারণ। তাছাড়া বাজার নিজের গতিতেই চলছে।’

দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে দুর্বল কোম্পানির প্রাধান্য

নতুন তালিকাভুক্ত জেএমআই হসপিটালের দর টানা ছয় দিন বাড়ল এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই। ২০ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়ে এই কয় দিনে দর বেড়ে হলো ৩৫ টাকা ৩০ পয়সা।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৭৬ শতাংশ দর বেড়েছে লোকসানি কোম্পানি ইমাম বাটন। তৃতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে বস্ত্র খাতের সাফকো স্পিনিং, যার দর বেড়েছে ৩.৬০ শতাংশ।

চতুর্থ অস্থানে থাকা স্বল্প মূলধনি আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের দর বেড়েছে ৩.৫৩ শতাংশ। পঞ্চম স্থানে ছিল লোকসানি আরেক কোম্পানি ফারইস্ট ফাইন্যান্স, যার দর বেড়েছে ৩.৫০ শতাংশ।

ষষ্ঠ স্থানে ছিল বিএসইসির অজান্তে কোম্পানি বিক্রি হয়ে যাওয়া বন্ধ কোম্পানি মিথুন নিটিং, যার দর বেড়েছে ৩.১২ শতাংশ।

এর পরের অবস্থান ছিল বিডি ফাইন্যান্স, যার দর বেড়েছে ৩.০০৮ শতাংশ। অষ্টম স্থানে থাকা সোনারগাঁও টেক্সটাইলও লোকসানি কোম্পানি। নবম স্থানে থাকা হাওয়েল টেক্সটাইল ও দশম স্থানে থাকা রহিম টেক্সটাইলও স্বল্প মূলধনি, যার শেয়ার প্রতি আয়, লভ্যাংশের ইতিহাস খুব ভালো নয়।

লেনদেনের শীর্ষ পাঁচ খাত

আগের দিনের মতোই লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে প্রকৌশল খাত। ৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা লেনদেনের দিন এ খাতের ২১টি কোম্পানির দর বেড়েছে। কমেছে ১৫টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৬টির দাম। আগের দিন লেনদেন হয় ৭২ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

বুধবার ৪৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা হাতবদলের মধ্য দিয়ে চতুর্থ স্থানে থাকা বিবিধ খাতে আজ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। ৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৬টি কোম্পানির দর বৃদ্ধিও বিপরীতে কমেছে ৮টির।

গতকালের চেয়ে লেনদেন কমেছে বস্ত্র খাতে। ৬৯ কোটি থেকে লেনদেনে কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ১০ লাখ টাকায়। ২২টি কোম্পানির দাম বেড়েছে। ২৫টির কমেছে। অপরিবর্তিত ছিল ১২টির।

১২টি কোম্পানির দর বৃদ্ধি হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। ১৫টির কমেছে এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টির। খাতটিতে লেনদেন কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি ৯০ লাখ টাকায়। বুধবার এটি ছিল ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

৪০ কোটি ৩০ লাখ টাকা লেনদেন করে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ব্যাংক। খাতটির ৮টি কোম্পানির দর বেড়েছে। ৫টি কোম্পানি দর ধরে রাখতে পারলেও হারিয়েছে ২০টি কোম্পানি।

সূচক পতনে দায়ী যেসব কোম্পানি

সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে যে ১০টি কোম্পানি, এর মধ্যে চারটিই ব্যাংক খাতের।

সবচেয়ে বেশি ৭.৯৪ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ৮.১১ শতাংশ দরপতনে এই পয়েন্ট কমেছে।

রবির ১.৮৪ শতাংশ দরপতনের কারণে সূচক পড়েছে ৩.৭৩ পয়েন্ট। এরপরেই উত্তরা ব্যাংকের ১৩.৮৪ শতাংশ দর পতনের কারণে সূচক কমেছে ৩.২২ পয়েন্ট।

লাফার্জের দরপতনে ২.৪৮ পয়েন্ট, শাহ্জালাল ২.০৫ পয়েন্ট, মার্কেন্টাইল ১.৬২ পয়েন্ট, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ১.৬২ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ফার্মা ১.৪৬ পয়েন্ট, আইসিবি ১.২৬ পয়েন্ট এবং রেনাটার দরপতনে সূচক কমেছে ১.১৬ পয়েন্ট।

অর্থাৎ এই ১০টি কোম্পানিই সূচক ফেলেছে ২৬.৫৪ পয়েন্ট ।

সূচক বাড়িয়েছে যারা

ওয়ালটন হাইটেকের দর ১.২৩ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচক বেড়েছে ৫.৭৪ পয়েন্ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫.৬৯ পয়েন্ট সূচকে যোগ করেছে স্কয়ার ফার্মা। এদিন কোম্পানিটির দর বেড়েছে ২.০৬ শতাংশ।

এরপরেই ২.৩১ পয়েন্ট বাড়িয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ।

এছাড়া তিতাস গ্যাস ০.৭১ পয়েন্ট, জেএমআই হসপিটাল ০.৫৭ পয়েন্ট, বার্জার পেইন্টস ০.৪৮ পয়েন্ট, পূবালী ব্যাংক ০.৪৪ পয়েন্ট, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল ০.৪২ পয়েন্ট, বিএসআরএম লিমিটেড ০.৩৪ পয়েন্ট, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং সূচক যোগ করেছে ০.৩১ পয়েন্ট।

এই ১০ কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৭.০১ পয়েন্ট।

এ বিভাগের আরো খবর