পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে এবার চালু হয়েছে বাংলাদেশ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার। এই সেন্টার চালু হওয়ায় কম খরচ ও দ্রুততম সময়ে মিলবে সব ধরনের ভিসা সুবিধা। বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে হলে শিলিগুড়ি ও আশপাশের বাসিন্দাদের ভিসা নিতে যেতে হতো ৬০০ কিলোমিটার দূরের কলকাতায়। ভিসা হাতে পেয়ে শিলিগুড়িতে ফিরতে তাদের বাড়তি কয়েক হাজার রুপি খরচ ও কয়েক দিন সময় নষ্ট করতে হতো।
শিলিগুড়িতে নতুন সেন্টার চালু হওয়ায় এই রাজ্যের অধিবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে।
গত বছর ১৪ ডিসেম্বর কলকাতায় বাংলাদেশি ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার চালুর পর এটি পশ্চিমবঙ্গে দেশের দ্বিতীয় ভিসা সেন্টার। ভিসা আবেদনের জন্য এখন এই রাজ্যের বাসিন্দাদের শুধু কলকাতার ওপর নির্ভর করতে হবে না।
বুধবার কলকাতাভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ডিইউ ডিজিটাল বিডি প্রাইভেট লিমিটেডের উদ্যোগে শিলিগুড়ির সেবক রোডের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে নতুন এই ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়।
নতুন এই ভিসা সেন্টারের ফলে রাজ্যের বাংলাদেশিদের পাশাপাশি প্রতিবেশী নেপাল, ভুটান ও অন্য দেশের নাগরিকরাও ভিসার আবেদন করতে পারবেন।
ভারতের বাংলাদেশ হাইকমিশন অনুমোদিত বেসরকারি সংস্থা ডিইউ ডিজিটাল বিডি প্রাইভেট লিমিটেডের উদ্যোগে এবং সোনালী ব্যাংকের সহযোগিতায় এই কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
সংস্থাটির এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সব ধরনের ভিসা প্রক্রিয়ার জন্য আবেদনকারীকে ৮২৫ রুপি জমা দিতে হবে। বাসায় বসে এই সেবা পেতে গেলে কুরিয়ার ফি বাবদ অতিরিক্ত ৪০০ রুপি দিতে হবে।
ঢাকা ও শিলিগুড়ির মধ্যে সরাসরি ট্রেন চালু করতে দুই দেশের কর্তৃপক্ষ যখন পরিকল্পনা নিয়েছে, ঠিক তখনই শিলিগুড়িতে এমন সেবা সেন্টার চালু করা হয়েছে।
একই সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির অধীন শিলিগুড়ি হয়ে বাংলাদেশ-নেপাল বাস সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথাও রয়েছে।
এই সেবা সেন্টার চালু হওয়ায় এমন রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দুটি আরও বেশি সফল হবে বলে প্রত্যাশা অনেকের।
পর্যটন সংস্থা হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (এইচএইচটিডিএন) সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সানেয়াল বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের জন্য এই সেবা সেন্টারটি অনেক সুবিধা নিশ্চিত করবে।’
তিনি জানান, কলকাতা থেকে কমপক্ষে ৬০০ কিলোমিটার দূরে শৈলশহর দার্জিলিংয়ের কোলে ছোট্ট শহর শিলিগুড়ি। এই শহরের বাসিন্দাদের এতদিন বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে হলে ভিসা নিতে যেতে হতো কলকাতায়। ভিসা আবেদন এবং ভিসা হাতে পেয়ে শিলিগুড়িতে ফিরতে কম করে তিন থেকে পাঁচ দিন কলকাতায় অবস্থান করতে হতো তাদের। এতে তাদের বাড়তি খরচ হতো কয়েক হাজার রুপি। এই সেন্টার চালু হওয়ায় বাড়তি খরচ ও সময় বেচে যাবে ভ্রমণপিপাসুদের।
এ সময় সোনালী ব্যাংকের শিলিগুড়ি শাখার ব্যবস্থাপক শামীম আখতার জানান, এই কেন্দ্রে ভিসা আবেদন করতে সোনালী ব্যাংকের এই শাখা থেকে কারেন্সি পরিবর্তন করা যাবে। ভিসা আবেদনকারীদের সুবিধার্থে নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশনের সামনে একটি বুথ থাকবে এই ব্যাংকের।
ফিতা কেটে সেন্টারের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের সিইও এবং ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ইন্ডিয়া অপারেশন) রওশন জাহান।