বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আরও ৩০টি ডোনেট বাক্সে দেয়া হচ্ছে বিনা মূল্যে সবজি

  •    
  • ৭ এপ্রিল, ২০২২ ১৪:৪০

ডোনেট বাক্স থেকে সবজি নেয়া রিকশাচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘রোজা রেখে রিকশা চালানো কঠিন, শরীরে শক্তি দেয় না। আজ ভাড়াও কম। পরিচিত একজন বলেছিল এখান থেকে বিনা মূল্যে সবজি নেয়া যায়। তাই নিতে আসছি।’

‘যাদের সামর্থ্য আছে, তারা ডোনেট বাক্সে সবজি রাখবেন। আর যাদের সবজি কেনার টাকা নেই, তারা ডোনেট বাক্স থেকে সবজি নিতে পারেন’, চট্টগ্রাম ও আশপাশের বিভিন্ন জেলার অন্তত ৩০টি সবজির দোকানে ঝুলছে এমন ব্যানার। ব্যানারের নিচে রাখা সবজির ‘ডোনেট বাক্স’।

সচ্ছল ব্যক্তিরা সবজি কিনে রাখেন এসব বাক্সে। আর যাদের সবজি কেনার সামর্থ্য নেই তারা ডোনেট বাক্স থেকে বিনা মূল্যে সবজি নিয়ে যান।

দরিদ্রদের বিনা মূল্যে সবজি দেয়ার এ উদ্যোগটি প্রথমে নিয়েছিলেন নগরীর গরিবুল্লাহ শাহ এলাকার সবজি ব্যবসায়ী ইব্রাহীম খলীল।

তার এই উদ্যোগ নিয়ে নিউজবাংলায় ‘দরিদ্রদের বিনা মূল্যে সবজি দেন ইব্রাহীম’ শিরোনামে একটি সংবাদও প্রকাশিত হয়।

ইব্রাহীমের উদ্যোগটি ছড়িয়ে দিতে কাজ শুরু করেন চট্টগ্রামের দুই ব্যবসায়ী কায়সার আলী চৌধুরী এবং আবু হাসান।

চট্টগ্রাম শহর ও উপজেলা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলায় তাদের সাহায্যে বসানো হয় ৩০টিরও বেশি সবজি ডোনেট বাক্স। শুধু তা-ই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিনা মূল্যে সবজি বিতরণের খবর দেখে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী নিজ উদ্যোগে নিজেদের দোকানের সামনে সবজি ডোনেট বাক্স বসিয়ে দরিদ্রদের বিনা মূল্যে সবজি দিচ্ছেন।

সবজি ডোনেট বাক্সের উদ্যোক্তা কায়সার আলী চৌধুরী বলেন, ‘সবজি ব্যবসায়ী ইব্রাহীমের উদ্যোগের পর আমরা গরিবুল্লাহ হাউজিংয়ে একটা সবজি ডোনেট বাক্স রাখি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল রমজান সামনে রেখে মানবিকতা ছড়িয়ে দেয়া। অসহায় মানুষের সুবিধার জন্য সারা দেশে যেন এটা ছড়িয়ে পড়ে। সেদিক থেকে আমরা সফল। এখন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন বাজারে এটা চালু করছে। আমরা ব্যক্তিগতভাবে ৮ থেকে ১০টি করেছি।

‘শহরের আশপাশে জেলা-উপজেলা মিলিয়ে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরও ২০ থেকে ৩০টি ডোনেট বাক্স রয়েছে। এর বাইরে বগুড়া, নওগাঁ, ঢাকা, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নিজ উদ্যোগে এটা করছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল একটা ব্যাপার।’

সবজি ডোনেট বাক্সের আর্থিক জোগান কীভাবে আসে জানতে চাইলে কায়সার আলী বলেন, ‘এটা শুরুতে আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে করা। আমরা ওভাবে ফান্ড নিচ্ছি না। ফান্ডের চেয়ে নিজ নিজ এলাকায় ডোনেট বাক্স স্থাপনকে উৎসাহিত করছি আমরা। এতে ওই এলাকার অসহায়রা উপকৃত হবেন। আর এখানে তো দান করেন মূলত সচ্ছলরা। তারা নিজে সবজি কেনার সময় ডোনেট বাক্সের জন্যও কিছু কিনে দিয়ে যান।’

সবজি ডোনেট বাক্স নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মূলত রমজানকে সামনে রেখেই করা হয়েছিল। পরিকল্পনা বলতে এটা আল্লাহর ওপর। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হয়েছে, আল্লাহ যতদিন চান, এটা ততদিন থাকবে।’

ডোনেট বাক্সের উদ্যোগটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় খুশি মূল উদ্যোক্তা সবজি ইব্রাহীম খলীলও।

তিনি বলেন, ‘আমি ছোট মানুষ, আমার ছোট উদ্যোগ। শুধু চেয়েছি কয়েকজন মানুষ হলেও দুবেলা দুমুঠো খাবার আরামে খেতে পারুক। দ্রব্যমূল্যের বাজার তো চড়া, অনেকের কষ্ট হচ্ছে। এখন যেহেতু এটি ছড়িয়ে পড়ছে, এখন চট্টগ্রাম শহরে বেশ কিছু বাজারে এটি চালু হয়েছে। শুনে খুব খুশি লাগল, এটাই তো পাওয়া। এখন আরও বেশি মানুষের উপকার হবে।’

ইব্রাহীম আরও বলেন, ‘আমার এই ক্ষুদ্র উদ্যোগটি কায়সার আলী চৌধুরী ভাই, আবু হাসান ভাইসহ যারা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ আমি। আমি তো চাই সারা দেশে এটা ছড়িয়ে পড়ুক। কাঁচাবাজারে এসে টাকার অভাবে কেউ খালি ব্যাগ নিয়ে ফিরে না যাক।’

চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার এলাকায়ও স্থাপন করা হয়েছে সবজি ডোনেট বাক্স।

এই বাক্সটি দেখভালের দায়িত্বে আছেন সবজি ব্যবসায়ী মো. মামুন। তিনি বলেন, ‘যাদের সামর্থ্য আছে তারা বাক্সে সবজি দিয়ে যায় আর যাদের টাকা দিয়ে কেনার সামর্থ্য নেই তারা বিনা মূল্যে সবজি নিয়ে যায়। এটা খুব ভালো উদ্যোগ। আমরা যতদিন আছি, এটা চালিয়ে নেব।’

নগরীর ষোলশহর এলাকার কর্ণফুলী কাঁচাবাজারে বুধবার বিকেলে সবজি ডোনেট বাক্স থেকে সবজি নিচ্ছিলেন রিকশাচালক দেলোয়ার হোসেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রোজা রেখে রিকশা চালানো কঠিন, শরীরে শক্তি দেয় না। আজ ভাড়াও কম। পরিচিত একজন বলেছিল এখান থেকে বিনা মূল্যে সবজি নেয়া যায়। তাই নিতে আসছি।’

এ বিভাগের আরো খবর