পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জের যমুনা, করতোয়া, বড়াল ও হুড়াসাগর নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
এতে জেলার চারটি উপজেলার ১১ ইউনিয়নে নদীতীরবর্তী নিম্ন অঞ্চলের প্রায় ৮০০ বিঘা জমির বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল লতিফ জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে গত ১০ থেকে ১২ দিন হলো যমুনায় পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাধ পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার সদর, কাজীপুর, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার চরাঞ্চলের জমির কাঁচা ও আধাপাকা ধান সবচেয়ে বেশি ডুবেছে। এর সদরের কাওয়াকোলা, ছোনগাছা ও সয়দাবাদ ইউনিয়ন; কাজিপুরের মুরসুরনগর, মেছরা, রতনকান্দি ও নাটুয়াপাড়া ইউনিয়ন এবং শাহজাদপুরের কৈজুরি, সোনাতনী, গালা ও জালালপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কাঁচা ও আধাপাকা ধান বেশি ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
অনেকে পানি থেকে কাঁচা ধান কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন। অনেকে আবার আধাপাকা ধান মাড়াই করে কিছুটা চাল বের করার চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া পানি বৃদ্ধির কারণে নদীতীরবর্তী তিল, বাদাম ও কাউন ডুবেও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।
এ বিষয়ে শাহজাদপুরের সনাতনী গ্রামের জিয়া উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের এ এলাকার অন্তত ১১৫ বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে। এ ধান দিয়ে আমরা বছরের অর্ধেক সময় খাদ্যের চাহিদা মিটিয়ে থাকি।
‘এখন চরম দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি। কাঁচা ধান কেটে গরুকে খাওয়াতে হচ্ছে। আমাদের মতো কৃষকের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সাহায্য প্রয়োজন।’
শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, ‘হঠাৎ পানি বাড়ায় উপজেলার প্রায় ২০০ বিঘা বোরো ধান ডুবে গেছে। এর মধ্যে ১১৫ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ ও ৭৫ বিঘা জমির ধান আংশিক ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে।’
কাজিপুরের নাটুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘অসময়ে নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের এলাকার অন্তত ১০০ বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে। এতে আমরা গরিব কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছি।’
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আজম আহসান শহিদ সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যমুনায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার নদীবেষ্টিত চার উপজেলার প্রায় ৮০০ বিঘা কালো বোরো ধান ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিরূপণ করা যায়নি।’