মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার শুধু কোলাপাড়া ইউনিয়নেই ভরাট হচ্ছে শতাধিক কৃষিজমি ও জলাশয়। এই ভরাটকাজে নিযুক্ত আছে অর্ধডজন অবৈধ ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক সিন্ডিকেট।
অবৈধ এই বাণিজ্যের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ইউনিয়নটিতে এখন প্রায়ই মারামারিসহ অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটছে।
বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, কোলাপাড়ার ব্রাহ্মণ পাইকসা, দক্ষিণ পাইকসা, কোলাপাড়া, কেয়টচিড়া, ডাক্তারবাড়ি, উত্তর কোলাপাড়া, গাবতলা ও দোগাছির বিভিন্ন মৌজায় কৃষিজমিতে বালু ভরাটের জন্য পকেট করে রাখা হয়েছে।
বেশ কিছু জমি ইতোমধ্যে ভরাটও করা হয়েছে। বাকিগুলোয় ড্রেজারের পাইপ স্থাপনের কাজ চলছে। পকেট করা এসব জমির বেশির ভাগই ধানি জমি। চলতি বছরেও এখান থেকে ধান উৎপাদন হয়েছে।
জলাশয়গুলো কেন ভরাট করা হচ্ছে তা বলতে পারছেন না ড্রেজারে নিযুক্ত শ্রমিকরা। ছয়টি ড্রেজারের মধ্যে কয়েকটির লাইন আনা হয়েছে পদ্মা নদী থেকে। এ ছাড়া ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কেয়টচিড়া ব্রিজের ঢালে ড্রাম ট্রাক দিয়ে বালু এনে তা ড্রেজারের মাধ্যমে টেনে নেয়া হচ্ছে।
এভাবে জলাশয় ভরাটেরও কাজ চলছে
স্থানীয়রা জানান, এসব ড্রেজার ও ড্রাম ট্রাক পরিচালনা করছে কোলাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সোহেল, মাহবুব শাহ, যুবলীগ নেতা শামীম, মুনসুরুল হাসান কুতুব, স্বপন, রাজিব, ওহাব দেওয়ানসহ বেশ কয়েকজন।
গত এক মাসে উপজেলা প্রশাসন অন্তত তিনবার ওই ইউনিয়নে অভিযান পরিচালনা করে এবং অবৈধ ড্রেজারের পাইপ ভেঙে দেয়। তার পরও কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট থামানো যাচ্ছে না।
অভিযোগের বিষয়ে সোহেল মেম্বার বলেন, ‘অনেক দিন ধরে ওহাব দেওয়ান ড্রেজার চালাচ্ছে। আমারটা কয়েক দিন আগে চালু করেছি।’
অন্য ড্রেজার মালিক রাজিব বলেন, ‘আমি একা নই অনেকেই এই ব্যবসা করছে।’
মো. শামীম বলেন, ‘ড্রেজারের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ বিষয়ে মুনসুরুল হাসান কুতুবের সঙ্গে কথা বলেন।’
এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণব কুমার ঘোষ বলেন, ‘কৃষিজমি কমে যাওয়ায় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে। তা ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ঢালাওভাবে কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট করা চরম অন্যায়। এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’