আদালতের ভরসাস্থল হতে জুনিয়র আইনজীবীদের আহ্বান জানিয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ।বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির উত্তর হলে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির লিখিত ‘অ্যান ওভারভিউ অফ ১০০ সেনসেশনাল মার্ডার কেজেজ অফ বাংলাদেশ’ শিরোনামে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জেল হত্যা মামলা, সৌদি কূটনীতিক খালাফ হত্যা, স্কলাস্টিকার ছাত্রী শাজনীন হত্যা, ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা, এরশাদ শিকদারের মামলাসহ ১০০ গুরুত্বপূর্ণ মামলা একত্রিত করে এই গ্রন্থ লেখা হয়।প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষ্ণা দেবনাথ বলেন, ‘আমার ৪১ বছরের বিচারিক জীবনে আপনাদের (আইনজীবী) কাছ থেকে অনেক শিখেছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পাস করার পর ৯ মাস আমি আইনজীবী হিসেবে অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছিলাম। পরে আমি বিসিএস দিয়ে বিচার বিভাগে চলে আসি।’
আপিল বিভাগের বিচারপতি বলেন, ‘একমাত্র নারী আইনজীবী হিসেবে রাজশাহী আদালতে আমি প্রথম শুনানিতে অংশ নিয়েছিলাম। এখন তো মহিলারা ভালো করছেন। এটা শুধু আমি মহিলা হিসেবে বলছি না। আমি বিচারিক জীবনে বিচার করতে গিয়ে আপনাদের কাছ থেকেই শিখেছি।
‘এখন থেকে ২০/২৫ বছর পরে তখন হয়তো আমরা অনেকেই থাকব না। এত বছর পরে আইন অঙ্গনে আজকের মতো খন্দকার মাহবুব হোসেনের মতো থাকবেন, তাদের মধ্যে একজন হবেন শিশির মনির। আমার বেঞ্চে যখন শিশির মনির দাঁড়াতেন, তখন আমি খুব ভরসা পেতাম। আইনের ব্যাখ্যা এবং রেফারেন্সগুলো তুলে ধরেন তিনি। এই যে ভরসাস্থল। একজন জুনিয়র আইনজীবী আদালতের ভরসাস্থল হিসেবে দাঁড়াতে পারেন সে জন্য আমার সামনে জুনিয়রদের উদ্দেশ করে বলব আপনারা এমন একটা জায়গায় যান।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এই বইটি স্বর্ণখনির ন্যায় আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য কাজে দেবে। এটি হ্যান্ডবুক হিসেবে থাকা উচিত।’আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘একজন ইয়াং আইনজীবী হিসেবে শিশির মনির এই বই লেখার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা বিরল। তার এই লেখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে প্রত্যাশা করছি।’
আইনজীবী এম শামসুল হক বলেন, ‘একটা জাতি কতটা সংস্কৃতিমনা সেটা নির্ভর করে সে জাতির বিচারব্যবস্থার ভূমিকার ওপর।’
আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ বলেন, ‘একজন আইনজীবীর জীবন শুধু ওকালতি না। জীবনকে উপভোগ করতে হবে। একটা বিচার বিভাগের বার যদি সমৃদ্ধ না হয়, তাহলে বেঞ্চ (আদালত) সমৃদ্ধ হবে না।’
আইনজীবী এসএম শাহজাহান বলেন, ‘আইন পেশায় ভালো করতে হলে আইনটা ভালো করে পড়তে হবে। কিন্তু তা না করে আমরা শুধু শর্টকাট সিদ্ধান্ত খুঁজে বেড়াই, রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহারের জন্য।’