করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর বন্ধ থাকার পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত আবারও শুরু হচ্ছে।
শোলাকিয়ায় ১৯৫তম ঈদুল ফিতরের জামাত আয়োজনের কথা জানিয়েছেন ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম।
বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ঈদুল ফিতরের নামাজ উপলক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি বিবেচনায় মাস্ক পরে ও জায়নামাজ নিয়ে আসতে পারবেন মুসল্লিরা। তবে মোবাইল ফোন সঙ্গে নেয়া যাবে না।
‘শোলাকিয়া ঈদগাহে নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে ঈদের দিনে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রোডে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। এ ছাড়া সিসিক্যামেরা, নিরাপত্তা চৌকি, ড্রোন ক্যামেরাসহ ৫ প্লাটুন বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য গোয়েন্দা বাহিনী মোতায়েন করা হবে।’
নরসুন্দা নদীর তীরে দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত হতো এই ঈদগাহ ময়দানে। এখানে একসঙ্গে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
এই ময়দানের আয়তন সাত একর। পুরো ঈদগাহ ময়দানের চারপাশে উঁচু দেয়াল দিয়ে বাউন্ডারি করা হয়েছে। তবে মুসল্লিরা যেন মাঠের সবদিক দিয়ে প্রবেশ ও বের হতে পারেন সে জন্য দেয়ালের মধ্যে ফাঁকা রাখা হয়েছে।
শোলাকিয়া মাঠে ঈদের জামাতের জন্য ২৬৫টি সারি হয়। প্রতিটি সারিতে প্রায় ৫০০ করে মুসল্লি দাঁড়াতে পারেন। সব মিলিয়ে শুধু মাঠের ভেতরেই প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
তবে মাঠের সমপরিমাণ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন মাঠের পাশের সড়ক ও খোলা জায়গায়। সব মিলিয়ে এই ময়দানে প্রায় তিন লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
এলকাবাসী জানিয়েছেন, ১৮২৮ সালে এই মাঠে ঈদের জামাতে একসঙ্গে প্রায় সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন। আর তখন থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’। পরে এই মাঠ শোলাকিয়া নামে পরিচিতি পায়।