শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ফের হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
বুধবার বিকেল সোয়া ৪টায় রাজধানীর গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন তার সঙ্গে আছেন।
শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসার কথা রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার চিকিৎসকদের একটি টিম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সবশেষ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে তার বাসায় যায়। পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকরা রোজা রাখতে বারণ করলেও তিনি রোজা রাখার চেষ্টা করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানো হয়। করোনার কারণে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এখন পর্যন্ত পাঁচবার খালেদা জিয়ার মুক্তির সময় বাড়ানো হয়েছে।
বাড়ি ফেরার এক বছর পর গত বছরের এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি নেত্রী। ৫১ দিন পর বাড়ি ফিরে একই বছরের ১২ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত আবার তিনি একই হাসপাতালে যান।
এরপর ১৩ নভেম্বর থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮১ দিন হাসপাতালে থাকেন বিএনপিপ্রধান। সে সময় তার দলের পক্ষ থেকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে নানা কর্মসূচি পালন করে। দাবি করা হয়, দেশের বাইরে না নিলে তাদের নেত্রীকে বাঁচানো যাবে না। কারণ তার যে রোগ, তার চিকিৎসা দেশে নেই।
খালেদা জিয়ার কী রোগ, সেটি জানানো হয়নি শুরুতে। পরে জানানো হয়, লিভার সিরোসিস হয়েছে তার। আর শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ একবার কোনো রকমে সামাল দেয়া গেছে। এর চিকিৎসা শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দু-একটি স্থানে আছে।
এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি বাসার বাইরে যান খালেদা জিয়া করোনার টিকার বুস্টার ডোজ নিতে। মহাখালীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তিনি টিকা দিতে যান নিজের গাড়িতে করে। সেদিন দলের নেতা-কর্মীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। হাসপাতালের কর্মীরা গাড়িতে বসা অবস্থায় তাকে টিকা দেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়াকে।
পরে উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করে। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাজা হয় ৭ বছর।
সেই থেকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারেই থাকতে হয় তাকে। পরে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।