আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক দিনে না করার পক্ষে মত দিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা। জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে ভোটগ্রহণ এক দিনে না করে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিভাগভিত্তিক করার সুপারিশ করেছেন তারা।
বুধবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত তৃতীয় দফার এ সংলাপে অংশ নিয়ে সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা এমন মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বেলা সোয়া ১১টায় শুরু হয় এ সংলাপ। তাতে অংশ নিয়ে ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক দিনে না করার প্রস্তাব করেন। পরবর্তী সময়ে প্রথম আলো পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন তার এই প্রস্তাবে সমর্থন দেন।
দেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে ইসির তৃতীয় দফা সংলাপে ২৩ সম্পাদকসহ ৩৪ জন সাংবাদিককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে সংলাপে অংশ নেন ২৩ জন। বাকি ১১ জন ইসির এই আমন্ত্রণে সাড়া দেননি।
তাসমিমা হোসেন বলেন, ‘একেক জেলায় একেক দিন ভোটগ্রহণ হলে নির্বাচনের পুরো পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। বিভাগভিত্তিক জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা যেতে পারে। দেখা যাবে আওয়ামী লীগ কটি সিট পায়, আর বিএনপি কটি সিট পায়।
‘৩০ শতাংশ ভোটার যদি ভোট দিতে যায় তাহলে একজন এত ভোট পায় কী করে? এগুলো অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। গত নির্বাচনে কে কত ভোট পেয়েছে তা নিয়ে রিসার্চ করা যায়। কেন বিএনপি আসবে না?’
ইসিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আশা করি না আপনারা শতভাগ ন্যায্য ভোট করবেন। ৫০ শতাংশ সাফল্য পেলে স্যালুট জানাব। আগামী নির্বাচন ভালোভাবে না হলে খুনোখুনি হবে। মেশিনগান নিয়ে নামবে।’
‘আপানারা ভালো একটা কাজ করতে এসেছেন। ডু অর ডাই এটিচুড না থাকলে আমরা বাঁচব না। সবাই বলে আগে টাকা করব, তারপর রাষ্ট্রক্ষমতায় যাব। লোকাল ইলেকশন থেকে সব জায়গায় একই হচ্ছে। সিস্টেম হ্যাজ বিন ব্রোকেন, মোরাল হ্যাজ বিন ব্রোকেন।’
সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকার সীমানা পরিবর্তন হয় হঠাৎ করে। আমাদের এলাকায় তিনবার হয়েছে।’
এই সম্পাদক বলেন, ‘ডিসি-এসপিকে বললে এখন আর কোনো কাজ হয় না। আমরা যাচ্ছি কোথায়? লিডারশিপের অভাব প্রতিটি বেলায়। আমরা এখন ওপরের দিকে তাকিয়ে থাকি। প্রথমে গণভবন, তারপর আল্লাহর দিকে।’
সোহরাব হোসেন তাসমিমা হোসেনের বক্তব্য সমর্থন করেন। ইসিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে এক দিনে নির্বাচন না করে ভাগ ভাগ করে নির্বাচন করতে পারেন।’
১১ জন সাড়া দেননি
ইসির সংলাপে ১১ জন সাংবাদিক সাড়া দেননি। তারা হলেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, জাগরণ সম্পাদক আবেদ খান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, আমাদের নতুন সময় সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, কালের কণ্ঠ সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, আমাদের সময়ের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সারওয়ার, জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক কামরুল ইসলাম খান, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।