বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্যানিটারি প্যাড মিলবে স্কুলেই, বসল ভেন্ডিং মেশিন

  •    
  • ৬ এপ্রিল, ২০২২ ১৫:১৭

ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার বলেন, ‘প্রতিটি ক্লাসের ক্যাপ্টেনের কাছে একটি কার্ড রাখা হয়েছে। যার প্রয়োজন সে ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে কার্ডটি সংগ্রহ করে স্যানিটারি প্যাড নিতে পারবে। প্যাড শেষ হলে, আমরা রিফিল করব।’

পিরিয়ড নারীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। এ নিয়ে ট্যাবু ভাঙেনি অনেকের। এ নিয়ে স্কুলপড়ুয়াদের বিপাকে ও লজ্জায় পড়তে হয় বেশি। লজ্জায় অনেকে বিষয়টি গোপনও রাখে। এমন দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদায়ী ছাত্রীরা।

বিদ্যালয়টিতে ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীরা বিদায় অনুষ্ঠানে চাঁদা তুলে জুনিয়রদের জন্য উপহার হিসেবে দিয়েছে হাইজিন স্যানেটারি প্যাডের ভেন্ডিং মেশিন। এমন মহৎ উদ্যোগে খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালে টানানো হয়েছে ভেন্ডিং মেশিনটি। ভেতরে একে একে সাজিয়ে রাখা হয়েছে স্যানেটারি প্যাড। কার্ড ব্যবহার করে প্রয়োজন অনুযায়ী প্যাড নিতে পারবে ছাত্রীরা।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, এই উদ্যোগ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবাক করেছে। তারা কখনোই ভাবেনি, সিনিয়ররা জুনিয়রদের জন্য এত ভালো একটি উপহার দেবে। এতে সবাই খুশি। ময়মনসিংহের প্রতিটি স্কুল-কলেজসহ সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন উদ্যোগ চালু করা প্রয়োজন। তাহলে কোনো মেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়বে না।

বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আয়েশা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ে এসে অনেক মেয়ে হঠাৎ করে বাসায় চলে যেতে চায়। কারণ জানতে চাইলে তারা ঠিকঠাক উত্তরও দেয় না। তখন বোঝা মুশকিল হয়ে যায়, সমস্যাটা কোথায়। তবে তাদের চোখেমুখে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির ছাপ দেখে বুঝতে পারি হয়তো পিরিয়ড হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ে হাইজিন স্যানেটারি প্যাড না থাকার কারণে লজ্জায় পড়ত এই মেয়েরাই। তাই শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার।’

স্বপ্না বেগম নামের আরেক শিক্ষক বলেন, ‘শারীরিক নানা কারণে অনেক সময় তুলনামূলক কম বয়সের মেয়েদেরও পিরিয়ড হয়ে যায়। তখন ব্যাপারটি না বোঝার কারণে তাদের প্রস্তুতিও থাকে না।’

‘এটি লজ্জার না, স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার না করলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা থাকে- এসব বিষয় আমরা মেয়েদের ক্লাসে বারবার বুঝিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি বিদ্যালয়ে হাইজিন স্যানেটারি প্যাড রাখা প্রয়োজন। এতে অস্বস্তি দূর হওয়ার পাশাপাশি মেয়েরা স্বাচ্ছন্দ্যে পড়াশোনা করতে পারবে।’

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদায়ী শিক্ষার্থীরা আমাকে এসে বলল, বিদ্যালয়ে স্যানেটারি প্যাড না থাকায় তারা মাঝেমধ্যেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।

‘তারা চায় না আর কেউ এমন পরিস্থিতিতে পড়ুক, তাই বিদ্যালয়ে ভেন্ডিং মেশিনসহ হাইজিন স্যানেটারি প্যাড উপহার দিতে চায়। কথাটি শুনে আমি অবাক হয়েছি। বিষয়টি আমাদের মাথায়ও এভাবে আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্লাসের ক্যাপ্টেনের কাছে একটি কার্ড রাখা হয়েছে। যার প্রয়োজন সে ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে কার্ডটি সংগ্রহ করে স্যানিটারি প্যাড নিতে পারবে। প্যাড শেষ হলে, আমরা রিফিল করব।’

এখন দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে। অনেকে এগুলো গোপন করার বিষয় থেকে বেরিয়ে এসেছে। এই মেশিন চালু হওয়ায় ছাত্রীরা খুশি। স্বাচ্ছন্দ্যে অনেকে প্যাড ব্যবহার করছে বলেও জানান শিক্ষক নাসিমা আক্তার।

এ বিভাগের আরো খবর