যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আগামী দিনগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে সোমবার সন্ধ্যায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।
এর আগে দুপুরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করেন মোমেন।
বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ৫০ বছরে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আমরা আশাব্যঞ্জক আলোচনা করেছি।’
১৯৭৪ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং ওই সময় দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ় ভিত্তি পায় বলেও জানান মোমেন।
তিনি বলেন, ‘তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এবং বৈশ্বিক- উভয় ক্ষেত্রে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির অভিন্ন উদ্দেশ্য পূরণে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হতে থাকে।’
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ইসোবেল কোলম্যান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ ও নাহিম রাজ্জাক।
এ সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের অংশীদারত্বের কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।’
করোনাভাইরাস মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কোটির বেশি ভ্যাকসিন দিয়ে সহযোগিতা দেয়ার বিষয়টি স্মরণ করেন মন্ত্রী।
রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি এবং রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় এককভাবে বৃহত্তম সহায়তা প্রদানের কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও অগ্রগতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান, নারীর ক্ষমতায়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উল্লেখ করেন মোমেন।
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় পাশে থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদারে শেখ হাসিনার সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি, বেসরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা, যুক্তরাষ্ট্র সফররত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ওয়াকার-উজ-জামান, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম সারোয়ার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর বে অফ বেঙ্গল স্টাডিজের পরিচালক সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা।