চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় নকল প্যান্টোনিক্স টোয়েন্টি ও মোনাস টেন ট্যাবলেট উৎপাদনের অভিযোগে ওয়েস্ট আয়ুর্বেদিক ল্যাবরেটরিজ কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে কারখানাটির মালামালও।
সোমবার বেলা ৩টায় দর্শনা পৌর কার্যালয়ের পাশে ওয়েস্ট ল্যাবরেটরিজ কারখানায় অভিযান চালায় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
এর আগে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের অভিযোগে কারখানাটির মালিক গিয়াস উদ্দিনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ওই ঘটনায় দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ঢাকার উপপরিচালক নুরুল আলম জানান, ১০ বছর ধরে নকল প্যান্টোনিক্স টোয়েন্টি ও মোনাস টেন ট্যাবলেট তৈরি করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। এক সহযোগীসহ প্রতিষ্ঠানটির মালিক গিয়াসউদ্দিন গ্রেপ্তার হওয়ার পরই তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির অন্য সদস্য হলেন চুয়াডাঙ্গা ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক কে এম মুহসীনিন মাহবুব।
নুরুল আলম আরও জানান, নকল ওষুধ তৈরিতে ওই প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হচ্ছিল আটা, ময়দা ও রং। দর্শনায় নকল ওষুধ তৈরি করে এগুলো আনা হতো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার ওষুধ মার্কেটে। সেখান থেকে ব্যবসায়ীদের হাত ধরে ও কুরিয়ার সার্ভিসে ছড়িয়ে দেয়া হতো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওষুধের দোকানগুলোয়।
গ্রেপ্তার হওয়াদের বিরুদ্ধে ডিএমপির চকবাজার থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ভেজাল ওষুধ তৈরির কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে। এর লাইসেন্স বাতিলেরও সুপারিশ করা হবে।
ওয়েস্ট আয়ুর্বেদিক ল্যাবরেটরিজ কারখানার সাইনবোর্ড
সম্প্রতি ডিএমপি পুলিশের লালবাগ গোয়েন্দা শাখা নকল ওষুধের সন্ধান পেলে এই অভিযানের সূত্রপাত হয়। পরে গত বুধবার রাজধানীর চকবাজার, ফকিরাপুল ও চুয়াডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ ও তার সহযোগী নকল ওষুধের পাইকারি বিক্রেতা আলী আক্কাস শেখকে নকল ওষুধ ও উৎপাদনের সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় উদ্ধার করা হয় ১০ লাখ ৩৪ হাজার পিস নকল প্যান্টোনিক্স টোয়েন্টি, ১৮ হাজার পিস নকল মোনাস টেন ট্যাবলেট ও উৎপাদনের সরঞ্জাম। পরে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ওয়েস্ট ল্যাবরেটরিজ কারখানায় অভিযান চালায় পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা শাখাপ্রধান।