বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘মনে হচ্ছিল সবাই মারা যাচ্ছি’

  •    
  • ৪ এপ্রিল, ২০২২ ২০:২৫

আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস বলেন, ‘একসময় মনে হচ্ছিল সবাই মারা যাচ্ছি। সবাই হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। কেউ কেউ লিফটের দরজা ভাঙার চেষ্টায় ছিলেন। কোনোভাবেই লিফটের দরজা খোলা যাচ্ছিল না। এভাবে আধা ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে যায়। অক্সিজের অভাবে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।’

বরিশালে আদালত ভবনের লিফটে আটকা পড়ে আইনজীবী, পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

লিফটে আটকা পড়া আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস বলেন, ‘একসময় মনে হচ্ছিল সবাই মারা যাচ্ছি। সবাই হাউমাউ করে কাঁদছিলেন।’

সোমবার দুপুরে নবনির্মিত ১০ তলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের লিফটে এ ঘটনা ঘটে।

অসুস্থ হয়ে পড়া অন্য ব্যক্তিরা হলেন আইনজীবী আজিজুর রহমান রিয়াজ, জাফরুন্নেছা রোজী ও মনিরুল ইসলাম মনির এবং এসআই জসিম উদ্দিন, কনস্টেবল কুলসুমসহ ১০ জন।

জেলা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এসআই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে যাওয়ার জন্য আইনজীবী, পুলিশ, বিচারপ্রার্থীসহ ১২ জন লিফটে ওঠার পর দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর লিফট কোনোভাবে ওপরে উঠছিল না।

‘প্রায় ৪০ মিনিট আটকে থাকায় অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়। এ সময় লিফটের ভেতর এবং বাইরে থেকে দরজা খোলার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ইট দিয়ে পিটিয়ে দরজা খোলা হয়। এরই মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে লিফটের ভেতরে থাকা ১০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েন।’

লিফট থেকে বের হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস। পরে তিনি বলেন, ‘একসময় মনে হচ্ছিল সবাই মারা যাচ্ছি। সবাই হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। কেউ কেউ লিফটের দরজা ভাঙার চেষ্টায় ছিলেন। কোনোভাবেই লিফটের দরজা খোলা যাচ্ছিল না। এভাবে আধা ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে যায়।

‘অক্সিজেনের অভাবে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। লিফটের ভেতর মোবাইলও কাজ করছিল না। এ কারণে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। পরে বাইরের লোকজন ইট দিয়ে দরজা কিছুটা ফাঁকা করে সবাইকে উদ্ধার করেন।’ উদ্ধারে সহায়তাকারী আইনজীবী মোখলেচুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘আদালত ভবনটি উদ্বোধনের পর থেকে লিফটে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। মাঝেমধ্যে লিফট অচল হয়ে থাকে, আবার কিছুটা ওঠার পর থেমে যায়। বিচিত্র রকম সমস্যার কারণে ১০ তলা ভবনে ওঠানামায় বেগ পেতে হয়। ভবনে আইনজীবী, পুলিশ ও বিচারপ্রার্থীদের জন্য লিফট দুটি। তাতে ধারণক্ষমতা ১০-১২ জন। তাও ঠিকমতো তুলতে পারে না।’

আইনজীবী আতিকুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘নিম্নমানের লিফটটি অপারেট করতে কোনো লোক দেয়া হয়নি। সমস্যা হলে বলার কোনো জায়গা নেই। আজ যে ধরনের বিপদ হয়েছে তা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা হয়েছে। ভবনে লিফটের সংখ্যাও কম। নিচতলা থেকে প্রতিটি ফ্লোরে দীর্ঘলাইন পড়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘লিফট আটকে গেছে জানার পর দৌড়ে ১১ তলায় যাই। সেখানে লিফটের পাওয়ার সুইচ বন্ধ করে আবার চালু করি। এরপর দরজা খুলে যায়।’

এদিকে ঘটনার পর বেলা দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জেলা জজ রফিকুল ইসলাম ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিবুল ইসলাম। সেখানে লিফটম্যান দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় গণপূর্ত বিভাগকে লিফটের সমস্যা দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেয়া হয়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি লস্কর নুরুল হক বলেন, ‘আমার ধারণা পুরোনো লিফট দেয়া হয়েছে। তা না হলে উদ্বোধনের পর পরই এত সমস্যা দেখা দেবে কেন। আজকের ঘটনা আরেকটু দীর্ঘ হলে কয়েকটি লাশ দেখা ছাড়া উপায় ছিল না।’

৪৯ কোটি ১৭ লাখ টাকায় নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনটি ৩ মার্চ উদ্বোধন করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর