গোপালগঞ্জে রেকর্ডভুক্ত জমি নড়াইল জেলায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।
গোপালপুর খেয়াঘাট সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে হাতে হাত রেখে সোমবার সকাল ৯টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে সদর উপজেলার চরসরসপুর, গোপালপুর ও চরপুকুরিয়া গ্রামের পাঁচ শতাধিক বাসিন্দা অংশ নেয়।
মানববন্ধন চলাকালে উরফি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির গাজী, আজিজুর রহমান, ওমর আলী বিশ্বাস, খোরশেদ মিয়াসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমার দাদা ও বাবার কবর এখানে। সিএস রেকর্ড, আরএস রেকর্ড, বিআরএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ডে আমাদের গোপালগঞ্জে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু আন্তজেলা সীমানা নির্ধারণের নামে নড়াইল ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমরা তা অবগত নই।
‘গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীর একাংশ কেটে নড়াইলে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। আমরা নড়াইল জেলায় যেতে চাই না। আমরা পৃথিবীর বুকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা হয়ে থাকতে চাই।’
উরফি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির গাজী বলেন, তিন গ্রামের মানুষ কোনোভাবেই নড়াইল জেলায় যেতে চান না। এখানকার (গোপালগঞ্জের) মানুষ নিরীহ এবং মধুমতির ওপারের (নড়াইলের) মানুষ খুব দুর্ধর্ষ। এখানকার ভূমি যদি নড়াইল জেলায় রেকর্ড হয়, তাহলে এ জেলার মানুষ অন্যায়-অত্যাচারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।
গোপালপুর গ্রামের ওমর আলী বিশ্বাস বলেন, ‘গোপালগঞ্জ আমাদের বসতবাড়ি। আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগ যুগ ধরে এখানে বসবাস করে আসছে। এখান থেকে গোপালগঞ্জ শহর কয়েক কিলোমিটার দূর। কিন্তু নড়াইল জেলা শহর প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে। নড়াইলের মানুষের সঙ্গে আমাদের কোনো ধরনের যোগাযোগ নেই। আমাদের দাবি, আমরা গোপালগঞ্জ জেলাবাসী ছিলাম, আছি এবং থাকব।’
একই গ্রামের বাসিন্দা খোরশেদ মিয়া বলেন, ‘কয়েক পুরুষ ধরে আমরা গোপালগঞ্জে বসবাস করে আসছি। কিন্তু মধুমতি নদীতীরের তিন গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের জমি নড়াইল জেলার মধ্যে অন্তর্ভুক্তি করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা নড়াইল জেলা নয়, বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান গোপালগঞ্জে থাকতে চাই।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা নিউজবাংলাকে বলেন, যেখানে দুই জেলার সীমানা নিয়ে কথা, সেখানে কোনো জেলাই ইচ্ছা করলে অন্য জেলার সম্পত্তি নিয়ে নিতে পারে না। বিষয়টি এখনই খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খোঁজখবর নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।